মেট্রোরেল বিল পাস
মাত্র ৩৮ মিনিটে উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ৬০ হাজার যাত্রী নিয়ে যাতায়াতের সক্ষমতা সম্পন্ন ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য বহুল আলোচিত মেট্রো রেল বিল পাস হয়েছে। বিলে মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের সর্বনিম্ন এক বছর থেকে অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৫ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সোমবার জাতীয় সংসদে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটি যাচাই বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়।
চলতি সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী দিবসে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। এরপর বিলটি চার সপ্তাহের মধ্যে যাচাই-বাচাই করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
সোমবার জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সুপারিশকৃত আকারে বিলটি পাস করার জন্য সংসদে প্রস্তাব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন স্থায়ী কমিটিতে গৃহীত সংশোধনীসহ বিলটি সংসদে পেশ করেন।
বিলটি পাসের প্রস্তাব করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তরুণ সমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সরকারের মেগা প্রজেক্ট হলো এই ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রজেক্ট। এ প্রকল্পে শূন্য দশমিক শূন্য এক টাকা সুদে জাইকার ঋণ ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। ৪০ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সাল হলেও ২০১৯ সালে মেট্রোরেল চালুর বিষয়ে জাপানকে রাজি করিয়েছে বাংলাদেশ। এ মাসেই প্রথম টেন্ডার আহ্বান করা হবে। চলতি বছরে বাকি ৮টি টেন্ডার আহ্বান করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ২১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের বিনিয়োগ ৫ হাজার কোটি টাকা।
মন্ত্রী সংসদকে আরো জানান, উত্তরা তৃতীয় ফেজ থেকে মিরপুর, ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটারের বেশি। এ পথে চলাচলকারী যাত্রীদের সুবিধার্থে ১৬টি স্টেশন রাখা হয়েছে। ট্রেনটি প্রতি ট্রিপে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহণ করতে পারবে। এজন্য ঢাকা র্যাপিড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি গঠন করা হয়েছে। রাজউক থেকে প্রয়োজনীয় ২২ হাজার একর জমি সংস্থাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত ও স্বল্প খরচে জনগণকে যতায়াতের সুযোগ করে দিতে ২০১২ সালে এই মেগা প্রজেক্ট গ্রহণ করেন।
বিলের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের যানজট নিরসন, দ্রুত ও উন্নত গণপরিবহন সেবা প্রদানের জন্য এই বিল আনা হয়েছে। বিলে সরকারি বেসরকারি অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে মেট্রোরেল নির্মাণের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে মেট্রোরেল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের সর্বনিম্ন এক বছর থেকে অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন ৫ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া টিকেট বা বৈধ পাস ছাড়া মেট্রোরেলের ভ্রমণ করলে যাত্রীকে ভাড়ার ১০ গুণ বা অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।
এছাড়া সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সংসদে ফাইনান্সিয়াল রিপোটিং আইন ২০১৫ উত্থাপন করেন। বিলটি যাচাই বাছাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।
মন্তব্য চালু নেই