মৃত্যুর কষ্ট কেমন? জানালো গবেষকরা…

আপনার দেহঘড়ি যখন থেমে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে তখন কেমন অনুভূতি হবে জানেন কী? সম্প্রতি গবেষকরা মৃত্যুর সেই অনুভূতি কেমন, তা জানার চেষ্টা করছেন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।

মানুষের মৃত্যুর অনুভূতি হয়ত কখনোই জানা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রায় মৃত্যুর অনুভূতি কেমন, তা নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণা করা হয়েছে। যে মানুষেরা নানা কারণে প্রায় মৃত্যুর পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন এবং আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছেন, তাদের থেকে অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

এসব গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের মৃত্যুর অভিজ্ঞতা তুলে ধরা খুবই কঠিন। বিভিন্ন হাসপাতালের মরণাপন্ন রোগীদের ওপর গবেষণা করেছেন গবেষকরা। এ ধরনের একজন গবেষক ওয়েইন স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর মার্গারেট ক্যাম্পবেল। তিনি বলেন, মৃত্যু বিষয়ে অনুভূতি মূলত তার আত্মীয়-স্বজন, পরিবারের সদস্য ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে জানা যায়। তবে তাদের বাদ দিয়ে সত্যিকার সে ব্যক্তির অনুভূতি সংগ্রহ করা কষ্টকর। মারা যাওয়ার দুই সপ্তাহ আগে থেকেই মানু অত্যন্ত অসুস্থ, নিদ্রালু ও প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে। আর এ অবস্থায় তারা তাদের অনুভূতি জানানোর সুযোগ পায় না।

এর পরেও গবেষণায় যতটুকু জানা গেছে, তা তুলে ধরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্যালিয়েটিভ-কেয়ার বিশেষজ্ঞ জেমস হ্যালেনবেক। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের মাঝে যা দেখতে পাই তা অনেকটা ব্ল্যাক হোলের মতো। তবে এ বিষয়টি বর্ণনা করা খুবই কঠিন, এটি তাদের মাঝে একটি শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণ অনুভূতির মতো কাজ করে। কেউ যখন মৃত্যুর সেই দিগন্ত অতিক্রম করে তখন তাদের মাঝে পরিবর্তন শুরু হয়।’

১০০ বছর আগেও মানুষের মৃত্যুর অনুভূতি বোঝার সুযোগ কম ছিল। কিন্তু এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানের নানা উন্নতিতে এ বিষয়ে জানার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন রোগে মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেই অনেকের মৃত্যুর বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। এ সময় মানুষের জ্ঞান থাকে না। অনেকেরই শ্বাস নিতে কষ্ট হয় কিংবা গলা থেকে শব্দ বের হয়। এটি দেখে অনেকে মনে করতে পারেন যে তার কষ্ট হচ্ছে। তবে বাস্তবে রোগীর প্রায়ই এ সময় কষ্টের অনুভূতি থাকে না।

যারা মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন তারা অনেকেই জানান, উজ্জ্বল আলোর দিকে তারা ধাবিত হচ্ছিলেন। আর সেই অনুভূতি ছিল সত্যিই বর্ণনার অতীত। এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন ইউসিএলএ ব্রেন ইনজুরি রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক ডেভিড হোভডা। তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর সময় মস্তিষ্ক যখন পরিবর্তিত হতে থাকে তখন দৃষ্টিশক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অংশেও এ প্রভাব পড়ে। আর এতে মানুষ আলো দেখতে পায়।’

মস্তিষ্কের যখন মৃত্যু ঘটতে থাকে তখন নিউরনগুলো নতুন রাসায়নিক নিঃসৃত করে। আর এটি হয় বিপুল পরিমাণে। ফলে বহু মানুষই এমন অনুভূতি লাভ করে যা অন্য যে কোনো অনুভূতির তুলনায় আলাদা।-কালেরকন্ঠ



মন্তব্য চালু নেই