মুনিরীয়া যুব তবলীগের ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) শীর্ষক আলোচনা সভা

কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মোর্শেদে আজম আওলাদে রাসূল হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী বলেছেন, বর্তমান যুগে সুন্নাতে নববীর প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত এবং খলিফায়ে রাসুলের মর্যাদায় অভিসিক্ত কাগতিয়ার গাউছুল আজম প্রতিষ্ঠিত এ দরবারের অন্যতম দর্শন হচ্ছে প্রিয় রাসুল (দঃ) এর রেখে যাওয়া সুন্নাতসমূহকে পুনরুজ্জীবন দান করা এবং রাসুলের অনুপম আদর্শ বাস্তবায়নের দিকে মুসলমানদেরকে ধাবিত করা। এ লক্ষ্যে কাগতিয়া দরবার ও অরাজনৈতিক আধ্যাত্মিক সংগঠন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ শুধু দেশে নয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ অষ্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে প্রতি বৃহস্পতিবার জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী কাজ করে যাচ্ছে। শুধু মুখেই আশেকে রাসুল দাবী করলে হবে না, কথাবার্তা, আচার-আচরণ, পোষাক-পরিচ্ছদ সহ জীবনযাপনের প্রতিটি ধাপে প্রিয় নবীজির সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে, সকল কিছুর ঊর্ধ্বে এমনকি নিজের জানমালের চেয়েও বেশি ভালবাসতে হবে প্রিয় রাসুলকে। এর মাধ্যমেই বহিঃপ্রকাশ ঘটে সত্যিকার রাসুলপ্রেমের এবং অর্জিত হবে প্রিয়নবীর সন্তুষ্টি। বাস্তবিকপক্ষে সুন্নাতে নববী ও আদর্শের অনুসরণকারীই হচ্ছেন প্রকৃত আশেকে রাসুল।
তিনি গতকাল শনিবার পবিত্র জশ্নে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপন উপলক্ষে রাউজান কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের ৬১তম পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) শীর্ষক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে একশ্রেণীর মুসলমানেরা শুধু বছরের একটি নির্দিষ্ট দিন বা মাসে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) পালন করাকে নিছক আনুষ্ঠানিকতার পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বছরের অন্য দিনগুলোর কথা বেমালুম ভুলতে বসেছে। এক্ষেত্রে কাগতিয়া দরবারের অনুসারীরা প্রতিদিন দরুদে মোস্তফা পাঠের মাধ্যমে বছর ব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপন করে থাকেন।
মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপন উপলক্ষে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বাদে জোহর খতমে কোরআন, ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) শীর্ষক আলোচনা সভা, বাদে আছর তরিক্বতের বিশেষ পদ্ধতিতে ফয়েজে কোরআন প্রদান, বাদে মাগরিব তাওয়াজ্জুহ্র মাধ্যমে রাসুল (দঃ) এর বাতেনী নূর বিতরণ এবং বাদে এশা মোর্শেদে আজমের তকরির, মিলাদ-কিয়াম ও আখেরী মুনাজাত। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও এসব কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে দুপুর থেকেই হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান দরবার শরীফে আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আছরের পূর্বেই মাহফিলস্থল দরবার শরীফস্থ গাউছুল আজম জামে মসজিদ প্রাঙ্গনসহ এর আশেপাশের এলাকা লোকে লোকারন্য হয়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও মাহফিলে প্রধান আলোচক ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক মুহাম্মদ ফোরকান মিয়া। অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারি অধ্যাপক জালাল আহমদ, সংগঠনের ওলামা পরিষদের সচিব আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম হানফি, উপাধ্যক্ষ আল্ল¬ামা বদিউল আলম আহমদী, আল্লামা কাজী আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, মাওলানা মুহাম্মদ সেকান্দর আলী, মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান নোমান ও মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান।
মিলাদ ও কিয়াম শেষে হুজুর ক্বেবলা দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা কাগতিয়ার গাউছুল আজমের দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন। এসময় হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানের আমিন আমিন ধ্বনিতে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সূচনা হয়।



মন্তব্য চালু নেই