মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি : অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন

১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক ‘স্থল সীমান্ত’ চুক্তি বাস্তবায়নে ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত প্রটোকল অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে ভারত-বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। যা ঐতিহাসিক মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি নামে পরিচিত। সেটি বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত প্রটোকল অনুসমর্থনের প্রস্তাব আজকের মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। কাজেই এটি এখন বাস্তবায়ন করা যাবে। এর জন্য নতুন করে আর কোনো সই লাগবে না। আগেই সই হয়ে গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন সফরের সময় অনুমোদিত প্রটোকলের দলীল পত্র বিনিময় হবে।

তিনি বলেন, এই চুক্তির আওতায় বেশ কিছু প্রভিশন রাখা হয়েছে। চুক্তিটি বাস্তবায়ন হলে তিন বিঘা করিডর ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে। ভারত এটি স্থায়ীভাবে বাংলাদেশকে লিজ দেবে। ছিটমহল বিনিময় এ চুক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এতে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ লাভবান বেশি হবে। তাদের দখলে থাকা ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশ পাচ্ছে। যার আয়তন ১৭ হাজার ১৬০ একর। জনসংখ্যা মোট ৩৭ হাজার ৮৬জন। অন্যদিকে ৫১ ছিটমহল ভারত পাবে। যার আয়তন প্রায় ৭ হাজার আর লোকসংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। সবমিলিয়ে ছিটমহল বিনিময়ে বাংলাদেশ ভারত থেকে ১০ হাজার ৫০ একর জমি পাবে।

মোশাররাফ হোসাইন আরো বলেন, ছিটমহল বিনিময় হলেও বাংলাদেশে থাকা ভারতের নাগরিকরা চাইলে সে দেশে থাকতে পারবেন, একইভাবে ভারতে থাকা বাংলাদেশিরা এদেশে চলে আসতে পারবেন।

সচিব বলেন, চুক্তিতে বাংলাদেশ ও ভারতের দখলে থাকা অপদখলী জমি হস্তান্তর করা হবে। ইতিমধ্যে যৌথ জরিপে চিহ্নিত করা হয়েছে ভারতে আমাদের ২ হাজার ২৬৭ একর জমি দখলে রয়েছে। আর আমরা তাদের ২ হাজার ৭শ ৭৭ একর জমি দখলে রেখেছি। এ ছাড়া সীমান্তের ৬.৫ কিলোমিটার জায়গা চিহ্নিত করা নেই। এই প্রটোকলের মাধ্যমে তা সমাধান করা হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে ঐতিহাসিক মুজিব-ইন্দিরা স্বাক্ষরিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বঙ্গবন্ধুর শাহাদতের পর বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরে ২০১১ সালে এটি নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রটোকল চুক্তি হয়। তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এতে স্বাক্ষর করেন। দীর্ঘদিন পর আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রটোকল চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই