মুখে কেন মেছতার দাগ?
মেছতা সাধারণত চোয়াল, নাকের ওপর ও কপালের ওপর বিস্তৃতি লাভ করে। ছোপ ছোপ কালো আর বাদামি দাগে চেহারাটা বিশ্রী করে ফেলে সহজেই। মেছতার মেডিকেল নাম হলো মেলাজমা। মেলানোসাইট নামে একধরণের কোষ ত্বকের ওপর এই অনাকাঙ্ক্ষিত রঙ সৃষ্টির জন্য দায়ি। এরা কখনো অতিরিক্ত কর্মক্ষম হয়ে ত্বকের এক জায়গায় জমে মেছতা তৈরি করে। আবার কোথাও দুর্বলভাবে ফিকে রং ধারণ করে।
মেছতার অবস্থান ও সৃষ্টিভেদে ৩ প্রকার হয়ে থাকে।
১. এপিডারমাল
এপিডারমাল ত্বকের উপরিস্তরে থাকে, যা চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা সম্ভব।
২. ডারমাল
ডারমাল ত্বকের নিচের স্তরে থাকে, এক্ষেত্রে চিকিৎসায় খুবই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
৩. মিশ্রিত
এ ধরনের মেছতা ত্বকের ওপর এবং নিচে উভয় জায়গায় থাকে। এই ধরনের মেছতার চিকিৎসায় অনেক সময় ভালো ফল আসে না।
মেছতা কেন হয়
মেছতার সুস্পষ্ট কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলেও কিছু কারণকে দায়ি করা হয়। পুরুসের মুখে মেছতা থাকলেও তুলনামূলক ভাবে নারীদের মুখে বেশি হয়। গর্ভবতী অবস্থায় হরমোন পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় এটা দেখা যায়। তাছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, সূর্যরশ্মির প্রভাব, ইস্ট্রোজেন হরমোন গ্রহণ ইত্যাদি কারণে মেছতা হয়ে থাকে।
মেছতার চিকিৎসা
ক্লিগমেন ফর্মুলা
এই ফর্মুলায় তিন ধরনের ওষুধের মিশ্রণ ব্যাবহার করা হয় যা ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। এই ব্লিচ মেলানসাইট সৃষ্টি কারি কোষের কার্যকরতাও থামিয়ে রাখে।
লেজার চিকিৎসা
লেজার চিকিৎসার মাধ্যমে মেছতা সারানো যায়। তবে অসচেতনতায় তা আবার ফিরে আসে।
এমসিডি
ঘূর্ণামাইক্রোমান যন্ত্রের সাহায্যে ত্বকের উপরের স্তরের দাগ ব্যথাহীন ও রক্তপাতহীনভাবে তুলে আনে। এরপর ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। এক-দুই মাসের মধ্যেই মেছতা নির্মুল হয়। এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে এটি শুধু এপিডারমাল যা চামড়ার একদম ওপরের স্তরের মেছতার জন্য কার্যকরী।
মেছতা থেকে বাঁচতে
১. সূর্যরশ্মি এড়িয়ে চলাতে সবসময় ছাতা কিংবা সানস্ক্রিন লোশন ব্যাবহার করুণ।
২. ভাজা ও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
৩. তাজা শাকসবজি, কাঁচা ও পাকা ফল খেতে চেষ্টা করুণ।
৪. মুখমণ্ডল ছাড়াও কারো যদি শরীরের অন্যান্য অঙ্গে মেছতার প্রকোপ বেশি থাকে তবে তাকে আঠালো জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।
৫. কারো মুখে যদি অনাকাঙ্ক্ষিত মেছতার দাগ হয়েই যায় তাহলে অবশ্যই কোনো চর্ম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে জরুরি পরামর্শ করতে হবে।
মন্তব্য চালু নেই