মুক্তিযোদ্ধারাও পাবেন ঈদ বোনাস
এখন থেকে মুক্তিযোদ্ধারাও দুই ঈদের বোনাস পাবেন। আগামী বাজেটে বিষয়টি কার্যকর করা হবে। সোমবার মিরপুর হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘আগামী বাজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঈদ বোনাস দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দুই ঈদেই এ বোনাস দেয়া হবে। এবং তা নতুন বাজেট থেকেই কার্যকর হবে। মুক্তিযোদ্ধারা যাতে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পান সে বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।’
৪০৭ জায়গায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিপক্ষে সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এধরনের একটি রিপোর্ট আমাদের কাছে পৌঁছেছে। তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রতিটি ক্ষেত্রে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। প্রত্যক মুক্তিযোদ্ধার জন্য একই রকম কবরের ডিজাইন করা হবে। কবরের নামফলকে মুক্তিযোদ্ধার সংক্ষিপ্ত জীবনকর্ম উল্লেখ থাকবে। যেখানে যেখানে গণকবর আছে সেগুলোর জন্য ডিজাইন করা হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম এ স্মৃতিস্তম্ভ দেখে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে পারে।’
তিনি জানান, মিরপুর বধ্যভূমির পাশে ২ হাজার ৮শ ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। সেখানে যুদ্ধাহত এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে দেয়া হবে। এবং প্রতিবছর পাঁচ জন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে একটি করে বাড়ি দেয়া হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আইনগত ঝামেলার কারণে গত একবছর বিষয়টি ঝুলে আছে। আশা করছি আদালত খুব শিগগিরই এ বিষয়ে রায় শোনাবে।আমরা জটজলদি সম্ভব এ সার্টিফিকেটগুলো আপনাদের হাতে তুলে দিবো।
সার্টিফিকেটের নিরাপত্তার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, টাকা জাল করা সহজ হতে পারে কিন্তু সার্টিফিকেট নকল করা সম্ভব হবে না। নিরাপত্তার জন্য আট ধরনের প্রযুক্তির সমন্বয় থাকবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
মুক্তিযোদ্ধার কোটায় যারা চাকরি করছেন তাদের ভোগান্তি নিরসনে সরকারের পদক্ষেপ জানিয়ে তিনি বলেন, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যারা চাকরি করবে তাদের বিস্তারিত তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরি করার কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর যাতে এধরনের ভুয়া কাগপত্র কেউ তৈরি করতে না পারে এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার যাতে সে সুযোগ নিতে পারে সেজন্যই এখন থেকে চার জায়গায় কাজগপত্র পাঠাতে হবে।
মুক্তযুদ্ধের ইতিহাস যাতে কেউ আর বিকৃত করতে না পারে সে কারণে প্রত্যক মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে অডিও রেকর্ড চাওয়া হবে। তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যে যা করেছেন তার একটি রেকর্ড সংগ্রহ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে উপজেলা, থানা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে খালেদার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির পর পাকিস্তান যে কথা বলেছে তিনিও প্রভুর পথ অনুসরণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি তো ১০ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন। দুইবার করে ২০ বার তিনি স্বাধীনতা এবং বিজয় দিবসের বাণীতে স্বাক্ষর করেছেন। সে বানীতে স্পষ্ট করে লেখা ছিলো ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাথ মা বোনোর সম্ভ্রমের বিণিময়ে আমাদের এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। তখন তিনি কোথায় স্বাক্ষর করেছিলেন? এখন এসে প্রভুর বুলি আওড়াচ্ছেন।
জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন উল্লেখ করে মন্ত্রী তাদের রাজনীতি, যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের দোসরদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় করার প্রক্রিয়া চলছে বলেনও জানান তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেটের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধো আগা খাঁন মিন্টুর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখে মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল অব: হেলাল মোর্শেদ খান, মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিনসহ আরো অনেকে।
মন্তব্য চালু নেই