মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দেখায় সমালোচনার ঝড়

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়। আর সে ছবি তাঁর ফেসবুকে আপলোড করায় নানান ধরনের আলোচনা-সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে। মন্তব্য, কটু মন্তব্য এমনকি নব্য রাজাকার বলতেও অনেকে ছাড়ছে না।

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর বোয়াফ’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান শ্রাবন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জুয়েলকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ৩০২ নম্বর কেবিনে ফুল নিয়ে যান কবীর চৌধুরী তন্ময় এবং সেখানে প্রায় ত্রিশ মিনিটের মতন মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার, কারাবাস ও শারীরিক অবস্থান নিয়ে আলাপচারিতা করেন বলে তিঁনি ফেসবুকে উল্লেখ করেন।

ফেসবুকে আপলোড করা ছবিতে লাইকের পাশাপাশি প্রায় দেড়’শ-এর উপর মন্তব্য, কটু মন্তব্যে ছেয়েগেছে। বেশীরভাগ মন্তব্যই ব্যক্তিগত আক্রমন করে।

আবার মাহমুদুর রহমান মান্নার মতন রাষ্ট্রদ্রোহী ব্যক্তিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা, ফটো তোলা নব্য রাজাকারের কাজ বলেও গালিগালাজ করতে অনেকে ছাড়েনি। শরীফ চৌধুরী নামক এক অ্যাক্টিভিষ্ট কমেন্ট করেছে, আপনি যখন লীগের বড়ো নেতা হয়ে লীগের শত্রুদেরকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিবেন, তখন আমি আমজনতা কেন লীগকে সমর্থন করবো? কেন আপনার আদলে গড়া লীগের শত্রু হবো না? ২৪/৭ লীগের পুন মেরে যদি মতি-মান্নারা আপনার কোলে চড়ে আমার পরিশ্রমের সর খায়, তাইলে আমি কেন পরিশ্রম করবো আপনার জন্য? এন্টি-লীগ হলে জামায়াত-বিএনপির আমলেও লাভ, লীগের আমলেও লাভ। আপনি যদি ক্ষনিকের ক্ষমতার বলে বঙ্গবন্ধুকে বিক্রয় করে তার হত্যাকারীদের সাথে কোলাকুলি করেন, আমি কোন নৌকায় ভোট দেবো?

মজিবুর রহমান নামক আরেকজন কমেন্ট করেন এই বলে, প্রথমত একজন দেশদ্রোহী বেঈমানকে ফুল দিয়ে বরণ করে স্যার সাজতে গিয়ে একটা আবাল বনে গেছেন। দ্বিতীয়ত আপনার শরীরের চামড়া গন্ডারের নাকি! এতো কথা হজম করছেন কিভাবে?

সেলিনা মওলা কমেন্টে বলেন, সবাই আপনাকে খারাপ বলতেছে যারা আপনাকে খারাপ বলতেছে তারা তো জানে না, লীগের নেতা হওয়া আপনার স্বপ্ন । আর নেতা হতে গেলে তেল দিতে এটাও এরা বোঝেনা আচ্ছা, ভাই আপনি আর কয় শতাব্দি পর নেতা হবেন ? জানাইয়েন কিন্তু আপনাকে ফুল না দিতে পারি থু থু দিতে পারবো ।

উয়সাল মহসি পাভেল কমেন্টে বলেন, বাহ! আচ্ছা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার ব্যাপারটা নিয়ে কি কোন আলোচনা হয়েছে??? আল হায়দার বলেন, কিছু বলার নাই কারন উনি স্যারের দেখানো পথ অনুসরণ করেছে মাত্র আর এই পথ অনুসারী হতে দুরে থাকাই উত্তম তাই বন্ধু তালিকা হতে গুড বাই করে দিলাম যাদের নীতি আদর্শ নাই তারা পৃথিবীর সব চেয়ে ভংয়কর মানুষ হয়ে থাকে। এমদাদুল একরাম নোবেল বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামীকে ফুল দিয়ে বরন। বাহ্ তা ভাই, যুদ্ধাপরাধীদের কবর জিয়ারতে কবে যাবেন ভাই…?? তৌফিকুল হক অনু বলেন, চমৎকার একটা ট্রল। ফাটাফাটি হইছে ভাই।

মন্তব্য, কটু মন্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে বোয়াফ সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, আসলে মন্তব্য বা কটু মন্তব্যকারী সবাই আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড। তাঁরা আমাকে খুব ভালোবাসে। এই আপলোড করা ছবি ব্যাপারে আলোচনা-সমালোচনা করার তাঁদের স্বাধীনতা আছে। আমি মনেকরি, ভালোবাসার মানুষগুলোই শাসন করার অধিকার রাখে।

বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন জোরদারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লাশ ফেলার’ কথা বলতে শোনা যাওয়া এবং পরবর্তীতে সেনা বিদ্রোহে উসকানি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মান্নাকে আটক করা আর সবশেষে জামিনে মুক্ত হওয়ায় হঠাৎ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিঁনি বলেন, আসলে মান্না ভাই জাতীয় রাজনীতিতে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব ও বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব মান্না ভাইকে দেখতে গিয়েছিলেন। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শারীরিক ব্যাপারে খোজ খবর নিয়েছেন। এটা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্প্রীতি এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে মাহমুদুর রহমান মান্নার গুরুত্বের বহিঃপ্রকাশ।



মন্তব্য চালু নেই