মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের গণকবরে বাংলাদেশের মানুষের খোঁজ

মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে গণকবরের খোঁজে শিউরে উঠেছে গোটা দুনিয়া। উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাকারাই নন, বাংলাদেশের বহু মানুষও নাকি সেই গণকবরে রয়েছেন। জীবিকার খোঁজে দালাল চক্রের হাত ধরে মানুষগুলোর দেশ ছেড়ে যাওয়া। ছেলেদের অপেক্ষায় থাকা সেই সব পরিবারের মর্মান্তিক কাহিনীই শুনতে পাওয়া যায় বাংলাদেশের টেকনাফে। নৌকো ভাসিয়ে ছেলে চলে গিয়েছে। পথ চেয়ে বসে হতদরিদ্র সব পরিবার। বাংলাদেশের দক্ষিণতম প্রান্তের সাগরপারের টেকনাফে শুধুই অনন্ত অপেক্ষা। ছোট্ট চিরকুটে কিছু ফোন নম্বর। থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়ার। ঘরের ছেলেদের ফিরে পেতে সম্বল বলতে এটকুই।

বেশিরভাগ সময়ই সেই সব নম্বরে যোগাযোগ করা যায় না। কখনও আবার আপনিই ফোন আসে। টাকা চেয়ে। কখনও কুড়ি হাজার, কখনও তিরিশ। কোনরকমে সেই টাকা যোগাড় করে দিয়েও ছেলেকে ফিরে পাননি অনেকেই।

কাঠমিস্ত্রির কাজ জানলে মালয়েশিয়ায় প্রচুর রোজগার। মানব-পাচার চক্রের এক দালালের মুখে একথা শুনেই ছেলেকে পাঠানোয় রাজি হয়েছিলেন খালেদা বানু। পরে জানতে পেরেছেন বিদেশে তাঁর ছেলেকে আরেক দালালের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

খালেদা বানুর মতো গল্প এগ্রামের ঘরে ঘরে শোনা যায়। বঙ্গোপসাগরের এক প্রান্তের এই জনপদ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড এমনকি ইন্দোনেশিয়ায় চলে যাওয়ার সহজতম রাস্তা। মায়ানমারের অশান্তির জেরে সেখানকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষও প্রায়শই চলে আসে এখানে। সীমান্ত রক্ষীদের কড়া নজর এড়িয়েই।

জীবন বাঁচাতে বা জীবিকার খোঁজে দেশান্তরে যাতায়াত। আর তাতেই হতদরিদ্র সব মানুষগুলো খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরে দালালদের। রমরমিয়ে চলে মানব-পাচারের ব্যবসা। দেশান্তরী মানুষগুলোর পরিণতি কী হচ্ছে? মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া বেশ কিছু গণকবর তারই সাক্ষী।



মন্তব্য চালু নেই