মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য চাইবে বিএনপি

সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যা চক্রান্তের মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার এবং এ বিষয়ে বিএনপিকে জড়িয়ে ক্ষমতাসীনদের বক্তব্যের জবাব দিতে দু-এক দিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করবে দলটি।

তবে এর আগে ঘটনা বিশ্লেষণ এবং ওই সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে তথ্য নেবে বিএনপি।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি নেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাত সাড়ে ৯টায় বৈঠকটি শুরু হয়ে চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত।

শফিক রেহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও তিনিই বিএনপির অন্যতম প্রধান পরামর্শক এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্বে যে কজন নেতা আছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে শনিবার ইস্কাটনের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পাঁচ দিনের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে শফিক রেহমান চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা।

অন্যদিকে বিএনপি বলছে, অন্যায়ভাবে এবং মিথ্যা অভিযোগে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতেই সরকার একের পর এক ঘটনা ঘটাচ্ছে।

এর অংশ হিসেবে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে যারা সোচ্চার হচ্ছেন, তাদের ধরে ধরে কারাগারে দেওয়া হচ্ছে।

শফিক রেহমানকে ‘অন্যায়ভাবে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি গোটা জাতিকে নাড়া দিয়েছে। যে (শফিক রেহমান) সারা জীবন সত্য ও সুন্দরের পক্ষে লিখেছেন, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন; তাকে মিথ্যা প্রচারণার মধ্য দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার এবং জয়কে অপহরণসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিএনপিকে জড়ানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ঘটনায় বিএনপির নেতারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারা যেসব তথ্য তুলে ধরেছেন, এর বিপরীতে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরার বিষয়ে মতামত আসে। তবে এর আগে মার্কিন স্টেট ডিমার্টমেন্ট থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে তা বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি তার অবস্থান জানাবে। সেটি দু-এক দিনের মধ্যেই হতে পারে বলে জানান বৈঠকে অংশ নেওয়া এক নেতা। এ ছাড়া শফিক রেহমানকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য তার পক্ষে লড়বেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আ স ম হান্নান শাহ, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, ড. ওসমান ফারুক, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই