মান্দায় আড়াই’শ বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত

নওগাঁর মান্দা উপজেলার মোহাম্মদপুর মৌজায় স্থাপিত গভীর নলকূপটি অন্তত ২০ ফুট মাটির নিচে ধসে গেছে। গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে ধসে যায় এর পানির হাউসটি। দুপুরের দিকে নলকূপের পুরো ঘরটি মাটির নিচে চলে যায়। ঘটনায় এলাকাজুরে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তিন মাঠের আড়াই’শ বিঘা জমির বোরো আবাদ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি বিএমডিএ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গভীর নলকূপের অপারেটর মোস্তাফিজুর রহমান সুমুন জানান, ১৯৮৭ সালে মোহাম্মদপুর ২১৮ নম্বর মৌজায় এ গভীর নলকূপটি স্থাপন করে উপজেলা বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। গত দু মৌসুমে এ নলকূপটি থেকে পানির সঙ্গে বালি ও ছোট ছোট পাথরকুচি উঠে আসছিল। বিষয়টি বিএমডিএ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। চলতি মৌসুমে নলকূপটির সর্বশেষ অবস্থার কথা জানিয়ে দু’সপ্তাহ আগে আবারো বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়ে নলকূপটি ধসে যায়। গভীর নলকূপের ড্রেনম্যান তোফাজ্জল হোসেন জানান, রাত দুইটার দিকে পানির হাইস সংলগ্ন এলাকায় সোঁ সোঁ শব্দে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। সেখানে গিয়ে দুইফুট গোলাকার একটি গর্ত দেখেন তিনি। বিষয়টি অপারেটর সুমনকে তাৎক্ষনিক অবহিত করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানির হাউসটি অন্তত ৫০ ফুট মাটির নিচে চলে যায়। দুপুরের দিকে পুরো ঘরটিই ধসে যায় মাটির নিচে। সংবাদটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শতশত নারী-পুরুষরা তা দেখার জন্য ঘটনাস্থলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন।

স্থানীয়রা জানান, এ গভীর নলকূপের পানি দিয়ে মোহাম্মদপুর, মহানগর ও কালীগ্রাম মাঠের ২৫০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে ২০০ বিঘার অধিক জমিতে চারা রোপন করা হয়েছে। এসব জমিতে শুধু চারা রোপন করতে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে তাদের ৪ হাজার টাকা। নলকূপটি ধসে পড়ায় লাগানো ধানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন তারা।

এদিকে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে নিছক দূর্ঘটনা বলে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। মাটির নিচ থেকে বালি ও পাথর বের হয়ে আসার কারনে নলকূপটি ধসে গেছে বলে মন্তব্য করেন বিএমডিএর সহকারী প্রকোশলী মাহফুজুর রহমান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

তবে, ওই নলকূপের বর্তমান অবস্থার কথা উল্লেখ করে অপারেটর আবেদন প্রসঙ্গে তিনি রাজি হননি। সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহিম ও থানার ওসি মোফাজ্জল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।



মন্তব্য চালু নেই