মানব পাচার রোধে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে : বার্নিকাট

সম্প্রতি বাংলাদেশের মানব পাচারের ঘটনাকে বড় ট্র্যাজেডি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট।

তিনি বলেন, ‘এটা একটা বড় ট্র্যাজেডি। আশা করছি সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। তারপরও মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ চাইলে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে।’

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানিতে ট্যারিফ কমানোর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে কংগ্রেসে প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সরকারের পদক্ষেপে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশে শ্রম অধিকার, শ্রমিকের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ট্রেড ইউনিয়ন চালু করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কোনো ইস্যু নয়, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এটি আমার প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ। তিনি শ্রম অধিকার, শ্রম আইন, ফ্যাক্টরি পরিদর্শন, বিশেষ করে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও সেখানে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমরা এ পর্যন্ত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তাকে জানিয়েছি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সরকার চাইলে আমাদের বিভিন্ন ট্রেনিং কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জিএসপি ইস্যুতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সব শর্ত প্রায় পূরণ করেছে। কিছু কিছু সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। তা ছাড়া গার্মেন্ট রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্যারিফ কমানোর বিষয়ে কংগ্রেসম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক বলেন, ‘মানব পাচার রোধে বৈঠকে কোনো কথা হয়নি। তবে এ বিষয়ে সরকার সজাগ রয়েছে। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রতিবছর ১২ থেকে ১৫ লাখ লোক শ্রমবাজারে আসে কিন্তু সবাইকে সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব হয় না। অথচ একটি চক্র তাদের মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’ তিনি এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। শ্রম আইন, শ্রম অধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন তিনি। এ সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচাক সৈয়দ আহমদ, যুগ্মসচিব (শ্রম) ফয়জুর রহমান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়। সরকার ৭২ দিনের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিদর্শক নিয়োগ, ফ্যাক্টরি পরিদর্শন কার্যক্রম জোরদার করেছে। ইতিমধ্যে অনেক ট্রেড ইউনিয়ন চালু করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই