মাথা একজনের দেহ আরেকজনের!

বিষয়াটি কোনো সায়েন্স ফিকশনের গল্প বা সিনেমা নেয়। এটি এখন সম্ভাব্য বাস্তবচিত্র। এবার চিকিৎসকরা মানুষের মাথা প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছেন। তাও মৃত নয়, জীবিত মানুষের মাথা।

রুশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী ৩০ বছরের তরুণ ভ্যালিরি স্পিরিদোনোভ দুর্লভ জিনগত মাংসপেশী ক্ষয়রোগে ভুগছেন। এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এর সমাধান হয়তো হতে পারে কেউ যদি তার নিজের দেহটাই বদলে ফেলতে পারে। অর্থাৎ মাথাটা থাকবে আপনার আর দেহটা থাকবে আরেকজনের। রীতিমতো অদ্ভূত কিংবা সায়েন্স ফিকশনের গালগল্পের মতো শোনা গেলেও ইতালির চিকিৎসক সের্গেই ক্যানাভেরো দাবি করেছেন, এ কাজটি করা সম্ভব এবং তিনি এটি করতে সক্ষম। এটি সম্ভব হবে আগামী দুই বছরের মধ্যে।

দেহই যখন পাল্টাবেন তখন বুড়ো কিংবা রোগীর দেহের সঙ্গে কেন? ক্যানাভেরোর দাবি, এটি করতে প্রয়োজন একজন সুস্বাস্থ্যবান মানুষের দেহ। এ ক্ষেত্রে দাতাও নাকি জোগাড় করে ফেলেছেন ভ্যালিরি স্পিরিদোনোভ। বিশ্বে প্রথমবারের মতো এই মাথা প্রতিস্থাপনে জীবন হারানোর ঝুঁকিটা কিন্তু অনেক বেশি। তবে ভ্যালিরি তার তোয়াক্কা করছেন না। তিনি বেঁচে থাকার সিকিভাগ সম্ভাব্না নিয়েই ছুরির তলায় যেতে চাইছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং আমি আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে চাই না।’

ভ্যালিরি স্বীকার করেন, ছুরির তলায় মাথা পেতে দিতে ভয় লাগছে। তবে তিনি জানান, এছাড়া তার উপায়ও নেই।

তিনি বলেন, ‘আমি যদি এ সুযোগটা কাজে না লাগাই তাহলে আমার দুর্ভাগ্য চরমে উঠবে। প্রতি বছর আমার অবস্থা খারাপ থেকে আরো বেশি খারাপের দিকে যাচ্ছে।’

শুধু মাথা আর দেহ হলেই হবে না। এ কাজটি করতে ক্যানাভেরোর একটি শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল কলেজের সহযোগিতা লাগবে যারা পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে। আর এ জন্য তিনি চোখ রাখছেন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। আগামী জুনে আমেরিকান একাডেমি অব নিউরোলজিকাল অ্যান্ড অর্থপেডিক সার্জনদের বার্ষিক সম্মেলনে নিজের পরিকল্পনার কথা জানাতে চাচ্ছেন ক্যানাভেরো। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো সমর্থন না পেলে এ কাজটি করতে চীনের দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তারা। কারণ ইতোমধ্যে চীন সফলভাবে ইঁদুরের মাথা প্রতিস্থাপন করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি বছর সময় অতিরিক্ত লাগবে তার।

ঝুঁকিপূর্ণ এ অপারেশন করতে ক্যানাভেরো তার নার্স ও চিকিৎসক দল গুছিয়ে ফেলছেন। ৩৬ ঘণ্টার এই অপারেশন করতে তার ১৫০ জন সহযোগী প্রয়োজন।

সের্গেই ক্যানাভেরো দাবি করেছেন, তার কাছে মাথা প্রতিস্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে গাদা গাদা ইমেইল পাঠিয়েছে লোকজন। এদের অধিকাংশই হিজড়া বা লিঙ্গ পরিবর্তনকামী। তারা একটি নতুন দেহ চায়। তবে তিনি প্রথম অপারেশনটি করতে চান এমন একজনের যার মাংসপেশীতে ক্ষয়রোগ রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই