মাথাপিছু জরুরি ত্রাণ ১ টাকা!
মানুষের উপেক্ষা আর প্রকৃতির রুদ্ররোষে মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে ভোলার চরফ্যাশনের আড়াই লাখ মানুষ। গত পাঁচদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে হাজারো পরিবার। রান্নার উপায় না থাকায় খাদ্য, পানি আর আবাসন সঙ্কটে এ বিপর্যয় শুরু হয়েছে। তবে অঘোষিত এ বিপর্যয়ের খবর রাখেনি কেউ।
অনেক খবরের ভিড়ে হারিয়ে গেছে আড়াই লাশ মানুষের দুর্ভোগের খবর। আর তাই সরকারি-বেসরকারি ভাবে কেউ এগিয়েও আসেনি দুর্গতদের পাশে। একটানা পাঁচদিন না খেয়ে থাকা পরিবারগুলোতে শুরু হয়েছে হাহাকার।
এদিকে বুধবার জোয়ারের মাত্রা আরো বেড়েছে। বেড়েছে বাতাসের বেগ, বৃষ্টি। এতে দুর্গতদের দুর্ভোগ দীর্ঘস্থায়ী ও চরম আকার ধারন করার আশঙ্কা বাড়ছে। এর মধ্যে সরকারি ত্রাণ বরাদ্দ না থাকায় দুর্গতদের মাঝে ক্ষোভ বেড়েছে। যা প্রতিবাদ, বিক্ষোভ আর প্রতিবাদে রূপ নিতে পারে।
এদিকে মঙ্গলবার প্লাবনে দুর্গত মানুষের জন্য আড়াই লাখ টাকার জরুরি ত্রাণ বরাদ্দ করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের বিশেষ তহবিল থেকে আপদ মোকাবেলার জন্য জরুরি এ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজাউল করিম নিশ্চিত করেন।
তবে উপজেলা পরিষদের হিসেব অনুযায়ী পূর্ণিমার প্রবল জোয়ারে চরফ্যাশনে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে আড়াই লাখ মানুষ। সরকারি হিসেবে বরাদ্দকৃত অর্থ সবার মধ্যে পৌছে দিলে মাথাপিছু এক টাকা করে দেয়া যাবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন আখন বলেন, সরকারিভাবে এখনো ত্রাণ বরাদ্দ হয়নি। প্রাথমিক ভাবে উপজেলা পরিষদ থেকে ওই পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শিগগিরই বরাদ্দের পরিমাণ বাড়বে।
উল্লেখ্য, চরফ্যাশনের পূর্বাঞ্চলে মেঘনার ভাঙনে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণ না করায় গত শুক্রবার থেকে পূর্ণিমার প্রভাবে প্রবল জোয়ারে মাদ্রাজ, আসলামপুর, জিন্নাগড় এবং হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একই সাথে বেড়িবাঁধ না থাকায় বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন ঢালচর, কুকরী এবং মুজিব নগরের ৩৬টি গ্রামসহ বেড়িবাঁধের বাইরের অংশ প্লাবিত হয়। দিনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জোয়ার বাড়ছে, বাড়ছে প্লাবিত গ্রাম এবং পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা। একটানা পাঁচদিন ধরে জোয়ারের তোড়ে পানিতে ভাসছে পুরো চরফ্যাশন। পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে দিন পার করছে আড়াই লাখ মানুষ।
মন্তব্য চালু নেই