শনিবার মিরপুরে মুখোমুখি হচ্ছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনা কিংবা চেলসি-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ফুটবলে এসব বড় বড় ক্লাবের ম্যাচ মানেই আলাদা রোমাঞ্চ। ভক্তরা নাওয়া খাওয়া ছেড়ে স্টেডিয়াম বা টিভির সামনে বসে পড়েন। ফুটবলের মত এতোটা জনপ্রিয় নয় ক্রিকেট। তারপরও ম্যাচটা যদি হয় ভারত-পাকিস্তান, তাহলে তো কথাই নেই। উত্তেজনার বারুদ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। এশিয়া কাপের সুবাধে আবারো লড়াইয়ে নামছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দল। শনিবার মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মোকাবেলা করবে আফ্রিদি-ধোনিরা।

সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে ভারত। এশিয়া কাপের আগে সর্বশেষ ছয় ম্যাচের প্যাঁচটিতেই জয় পেয়েছে তারা। এরমধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে তাদেরকেই হোয়াইটওয়াশ করার সুখস্মৃতি। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেও সে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানেই হারিয়েছে ধোনিরা। অপরদিকে ঠিক উল্টো চিত্র যেন পাকিস্তানের। এশিয়া কাপের আগে সর্বশেষ ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে তারা।

মুখোমুখি লড়াইয়েও পিছিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ছয়বার মুখোমুখি হয়েছে এ দু’দল। এর মাঝে চারবার পরিস্কার ব্যবধানে জয়ে পেয়েছে ভারত। হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচ। আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচটি টাই হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। তবে পাকিস্তান কিছুটা সান্ত্বনা পেতে পারে এ ম্যাচ আইসিসির আয়োজিত কোন ইভেন্ট নয়। কারণ যে এই চার হেরেছে তার তিনটি আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। অপরটি ভারতের মাঠে।

তবে জয়ের ব্যাপারে দারুণ আশাবাদী পাকিস্তান দলের অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি। তার মতে ম্যাচের ভাগ্য দলের পেসাররাই বদলে দিতে পারেন। সাম্প্রতিক দারুণ ফর্মেও রয়েছেন পাকিস্তানের পেসাররা। পাকিস্তান বোলিং লাইন আপে রয়েছেন মোহাম্মদ ইরফান, মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ সামি ও ওয়াহাব রিয়াজের মত পেসাররা।

পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করেছেন তারা। জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ী আফ্রিদি বলেন, ‘ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা সাধারণত স্পিনারদের ভাল খেলে এবং তাদের বেশ কিছু খেলোয়াড় ফর্মেও আছে। ভালো ক্রিকেট খেলেই তারা এখানে এসেছে। আমাদের পেসাররা বেশ ভাল অবস্থায় আছে সেটা আমির, ইরফান বা ওয়াহাব যে কেউ হতে পারে। আমি জানি তাদের ব্যাটিং শক্তিশালি, কিন্তু আমাদেরও দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণ আছে। আমি আশা করছি ফলাফল আমাদের পাশে আনতে এটা (বোলিং) বেশ কার্যকরী হবে।’

তবে পাকিস্তানি পেসাররা যতই ফর্মে থাকুক তাদের ভয় পাচ্ছে না ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। তাদের মোকাবেলা করার মত যথেষ্ট শক্তিশালী ও দৃঢ় ব্যাটিং লাইন আপ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা। মিরপুরের ঘাসের উইকেটে ইরফান, আমির, সামি ও রিয়াজরা অনেক ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন জানেন রোহিত।

তাদের নিয়ে রোহিত আফ্রিদি বলেন, ‘পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ যে ভয়ানক তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মিরপুরের উইকেটে ব্যাটিং করা ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সংগ্রাম করতে হয়। তবে এটা নিয়ে আমরা ভাবছিনা কারণ আমরা বড় স্কোর করছি। ক্রিকেট খেলায় এমন হবেই আপনি উইকেট হারিয়ে ফেলবেন; কিন্তু এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের একটি দৃঢ় ব্যাটিং লাইনআপ আছে। তবে আমরা আমাদের শক্তির দিকে মনোযোগ দিয়ে পরিকল্পনাগুলো সাজিয়ে নিতে চাই। আমাদের শক্তি হলো ব্যাটিং।’

ভারতের রোহিত শর্মা, সুরেশ রায়না, বিরাট কোহলি কিংবা অধিনায়ক ধোনি যে কেউ ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিতে পারেন। তরুণ হার্দিক পাণ্ডেও বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের জাত চিনিয়েছেন। ইরফান, আমির, সামি বা রিয়াজকে মোকাবেলায় যে কেউই জ্বলে উঠতে পারেন। কম যাননা পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানরাও। হাফিজ, মালিক ও আকমলরা জ্বলে উঠলে বড় পরীক্ষাই দিতে হবে ভারতীয় বোলারদের। তাই সব মিলিয়ে দারুণ মিরপুরের মাঠে দারুণ এক উপভোগ্য ম্যাচ হবে বলেই আশাবাদী ক্রীড়ামোদীরা।



মন্তব্য চালু নেই