মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ
এলো শৃৃঙ্খল মুক্তির দিন। আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস । এ ভূভাগের সবচেয়ে বড় অর্জন, বাঙালির সহস্র বছরের জীবন কাঁপানো ইতিহাস- মহান স্বাধীনতা। ২৬ মার্চ জাতির বীরসেনানীদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের সূচনা দিন। বাঙালির স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিন। ২৬ মার্চ আমাদের গৌরব ও অহঙ্কারের দিন।
পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি। স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল এ বদ্বীপের মানুষ। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সূচনার সেই গৌরব ও অহঙ্কারের ৪৪বছর পূর্ণ হলো আজ।
ভয়াল কালরাতের ধ্বংসস্তূপ আর লাশের ভেতরে দিয়ে রক্তে রাঙা নতুন সূর্য উঠেছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। আজ থেকে ঠিক ৪৪ বছর আগে পাকিস্তানী হিংস্র শ্বাপদের গণহত্যার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। দীর্ঘ ন’মাস এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে মহান স্বাধীনতা।
২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করে বলেন, ‘এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।’ বঙ্গবন্ধুর এ স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার হওয়ার পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্বিচারে গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও সর্বব্যাপী পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি তাদের সর্বশক্তি নিয়ে সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সারাদেশে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। দেশের অকুতোভয় সূর্যসন্তানরা তুমুল যুদ্ধ করে লাখো প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা।
যাদের রক্ত ও সম্ভ্রমের মূল্যে আমরা পেয়েছি মহামূল্যবান এ স্বাধীনতা, তাদের গভীর কৃতজ্ঞতা, ভালবাসা ও বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করার দিন আজ। মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতি আজ উৎসবের পাশাপাশি গভীর শ্রদ্ধা, ভালবাসা আর বেদনায় স্মরণ করবে মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদকে। স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী তাঁর সহকর্মী জাতীয় নেতাদের।
নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান এ দিবসটি পালন করবে বাঙালি জাতি। দেশময় উড়বে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা। সকালে ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে দলমতনির্বিশেষে সেখানে হাজির হবে লাখো মানুষ।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ পৃথক বাণীতে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও বীরত্বগাথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রেডিও, টেলিভিশন, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সংবাদপত্রে বিশেষ নিবন্ধ ও অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনে জাতীয়ভাবেও ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই