মহাকাশে একরাতে ১৬বার নববর্ষ উদযাপন!

আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের এক্সপেডিশন-৪২। এখানে মহাকাশ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন ছয় মহাকাশচারী। পৃথিবী থেকে দূরে বলেই এখানকার সর্বজনীন উৎসবগুলো তারা মিস করতে চান না। অন্তত মহাশূন্যে থেকেও অনুভব করা যায় পৃথিবীর সজীব মাটি!

সারা বিশ্ব যখন নতুন বর্ষবরণে উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা সেই আনন্দ ছুঁয়ে যায় মহাকাশচারীদেরও। পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে শরিক হয়ে তারা উদযাপন করেন নববর্ষ। তবে এক রাতে ১৬বার! এটা কিন্তু অতি উচ্ছ্বাসের কারণে নয়। তারা সত্যিসত্যিই সে রাতে ১৬বার নববর্ষ পেয়েছেন।

ব্যাপারটা খোলাস করেই বলা যাক: এক্সপেডিশন-৪২ ভূপৃষ্ঠ থেকে ২২০ মাইল উপরে ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৫শ মাইল বেগে প্রদক্ষিণ করছে পৃথিবীর কক্ষপথ। যেখানে পৃথিবী তার অক্ষের উপর ঘুরছে ঘণ্টায় এক হাজার মাইল বেগে।

পৃথিবীর এই নিজ অক্ষের ঘূর্ণনকেই বলে আহ্নিক গতি। এর সুবাদেই কিন্তু এক অংশে যখন রাত তখন আরেক অংশে হয় দিন। পাশাপাশি অবস্থিত দুই দেশের সময়ের ব্যবধানও হয় মিনিট থেকে ঘণ্টা।

মহাকাশ২মহাকাশযান এক্সপেডিশন-৪২ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৫শ মাইল বেগে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। যা পৃথিবীর আহ্নিক গতির ১৭ গুণের বেশি। ফলে কাছাকাছি সময়ে তারা ১৬টি দেশের ওপর মধ্যরাতে (১২ টা ১ মিনিট) অবস্থান করেছেন।

এক্সপেডিশন-৪২ এর কমান্ডার নববর্ষ উপলক্ষে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায় পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘হিসাব করে দেখলাম একই দিন আমরা একই দিন পুরো মধ্যরাতে পৃথিবীর ১৬ দেশের ওপর অবস্থান করবো। তাই আমরা পরিক্ল্পনা করলাম ১৬বার নববর্ষ উদযাপনের, পৃথিবীতে আমাদের সহযোদ্ধা, আমাদের জনগণ ওই মুহূর্তে যা করছে আমরা তা-ই করার পরিকল্পনা ছিল আমাদের।’

তবে পৃথিবী থেকে শত মাইল দূরে থেকে পরিবার-পরিজনহীন বিজ্ঞানীদের নববর্ষ উদযাপন কিন্তু কেটেছে কাজের মধ্য দিয়ে। কারণ ৬ জানুয়ারি সেখানে নতুন সরবরাহ যান পাঠাচ্ছে নাসা। এতে থাকবে মহাকাশ গবেষণার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। পৃথিবী থেকে পাঠানো চকলেট খেয়েই তারা সেলিব্রেট করেছেন নতুন বছর।



মন্তব্য চালু নেই