মস্তিষ্ক ক্যান্সার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা

যখন অনেকগুলো টিস্যুর ভর মস্তিষ্কের কার্যাবলীতে হস্তক্ষেপ করে তখন মস্তিষ্কে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়। মস্তিষ্কের ক্যান্সার প্রধানত দুই ধরণের হয়ে থাকে।

১. প্রাথমিক মস্তিষ্কের ক্যান্সার
. মেটাস্ট্যাটিক মস্তিষ্কের ক্যান্সার

মস্তিষ্কের কোষ থেকে প্রাথমিক মস্তিষ্কের ক্যান্সার উৎপন্ন হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের কোষ থেকে মেটাস্ট্যাটিক মস্তিষ্কের ক্যান্সারের উৎপত্তি হয়। ডব্লিউ.এইচ.ও. এর সাম্প্রতিক প্রাক্কলন মতে, মস্তিষ্কের ক্যান্সার যদি খুব কমই ঘটে, তবুও বিশ্বে বছরে প্রায় ২২,০০০ নতুন মানুষ মস্তিস্ক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

নিম্নে মস্তিষ্কের ক্যান্সার এর কারন, লক্ষণ, উপসর্গ ও চিকিৎসা আলোচনা করা হল-

১. মস্তিষ্কের ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণসমূহ হল- মাথা ব্যথা, চোখের দুর্বলতা, বাজেয়াপ্ত, ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন, বমি, বক্তৃতা ব্যাঘাত, স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি।

২. মস্তিষ্কের ক্যান্সারের মধ্যে মাধ্যমিক মস্তিষ্কের ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। দ্বিতীয় সবচেয়ে বেশি ক্যান্সার হয়ে থাকে “Gliobalastoma” ক্যান্সার। যা একটি প্রাথমিক স্তরের ক্যান্সার।

. প্রাথমিক মস্তিষ্কের ক্যান্সারের রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ১০ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত। এর মধ্যে তাকে সকল ধরণের মেডিসিন, সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি দেয়া হলেও ওই সময়ের অতিরিক্ত সময় বাঁচানো সম্ভব নয়। যাদের মাধ্যমিক স্তরের মস্তিষ্ক ক্যান্সার রয়েছে, তাদের বেঁচে থাকার সময় প্রাথমিক ক্যান্সারের টাইপ ও মাধ্যমিক ক্যান্সারের স্ট্যাটাস এর উপর নির্ভর করে।

৪. মস্তিষ্কের ক্যান্সারের ধরণের উপর এর চিকিৎসা নির্ভর করে। কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি এরপর সার্জারি হল প্রাথমিক ব্রেইন ক্যান্সারের প্রথম চিকিৎসা। মাধ্যমিক মস্তিষ্কের ক্যান্সারের জন্য ক্যান্সারের আকার ও টিউমার এর সংখ্যার উপর নির্ভর করবে যে সার্জারি বা কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি ইত্যাদির কোনটি অবলম্বন করতে হবে।

৫. নারীদের তুলনায় পুরুষদের মস্তিষ্কের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। কিন্তু, প্রাথমিক স্তরের মস্তিষ্কের ক্যান্সার পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি হয়ে থাকে।

৬. মস্তিষ্কের ক্যান্সার ২০ বছরের কম বয়সী শিশুদের মাঝে বেশি দেখা যায়। ৫ থেকে ১০ বছর বয়সের মধ্যে সাধারণত মস্তিষ্কের ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়।

৭. আমরা ফোনে কথা বলার সময় ফোন থেকে যে তেজস্ক্রিয় তরঙ্গ নির্গত হয়, এর ফলে মস্তিষ্কের ক্যান্সার সৃষ্টি হয়।

৮. মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরণের টিউমার হয়ে থাকে। কিন্তু, সকল ধরণের টিউমার এর ফলে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয় না।

৯. মাথা ব্যথা মস্তিষ্কের ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় লক্ষণ। কিন্তু, সব ধরণের মাথা ব্যথার ফলে মস্তিষ্কে ক্যান্সার হয় না। যখন অনবরত মাথা ব্যথা দেখা যায় এবং দিন দিন তা আরও তীব্রতর ও প্রগতিশীল হয়ে ওঠে, তাহলে তা ক্যান্সারের কারনে হতে পারে। সকাল সকাল মাথা ব্যথা ব্রেইন ক্যান্সারের একটি চরিত্রগত লক্ষণ।

১০. প্রাথমিক স্তরের ক্যান্সারের রোগীরা অঙ্গদান করতে পারবে। কিন্তু যারা মাধ্যমিক স্তরের ক্যান্সারের শিকার তারা অঙ্গদান করতে পারবে না।
মস্তিষ্কের ক্যান্সারের কোন লক্ষণ যদি নিজের মাঝে বা অন্য কারও মাঝে দেখতে পান, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। টিউমার থাকা অবস্থায় অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এক্ষেত্রে দেরি করা একদম উচিৎ নয়।–সূত্র: কেয়ার ইনফো।



মন্তব্য চালু নেই