মধুমতিতে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির কুমির

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের সিরগ্রাম এলাকায় মধুমতি নদীতে একটি বিরল প্রজাতির কুমির ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গ্রামবাসী বিশাল আকৃতির এই কুমিরটি আটক করে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় আট মিটার লম্বা এই স্ত্রী কুমিরটির ওজন প্রায় দেড় মণ। ধরার সময় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত হলেও কুমিরটি এখনো জীবিত আছে।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, ৫০ বছরের মধ্যে এই প্রথম মধুমতি নদীতে কুমিরের দেখা পাওয়া গেছে। কুমিরটি দেখতে শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সিরগ্রাম এলাকার বাসিন্দা দাউদ খাঁন চার-পাঁচজনকে সঙ্গে নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যান। নদীর অপর পাড়ে চরে তারা বৃহৎ আকৃতির কুমির দেখতে পেয়ে আঁতকে ওঠেন। দৌড়ে পালানোর সময় তাদের সঙ্গে থাকা রাসেলকে (২০) আক্রমণ করে কুমিরটি। কুমিরের কামড়ে রাসেলের পায়ে গুরুতর জখম হয়। তাকে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রাসেল সিরগ্রামের রফিক খাঁনের বাড়িতে এসেছেন। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারির নওপাড়া এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।

কুমিরের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতে গ্রামবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কুমিরের ওপর আক্রমণ করে। একপর্যায়ে আহত কুমিরটিকে তারা ধরে নিয়ে আসেন। কুমিরটি এখন জীবিত অবস্থায় দাউদ খাঁনের বাড়িতে আছে।

ধারণা করা হচ্ছে, সুন্দরবন এলাকা থেকে ঢাউস আকৃতির এই মিঠাপানির কুমির পথ ভুল করে মধুমতি নদীতে চলে এসেছে।

সিরগ্রামের মধুমতি পারের ফিরোজ খাঁন (৬৫) জানান, শৈশব থেকে তিনি মধুমতি নদীর পাড়ে বাস করছেন। একসময় নদীতে প্রচুর শুশুক (ডলফিন) দেখা গেলেও নদীতে কখনো কুমির দেখেননি বা ধরা পড়ার খবর পাননি। তবে তিনি তার দাদার কাছ থেকে মধুমতিতে কুমিরের পাওয়ার গল্প শুনেছেন।

মাগুরার অতিরিক্ত পলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কুমিরটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মহম্মদপুর উপজেলাপ্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা জানান, কুমিরটি গরুতর আহত। তাকে সুস্থ করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীন হোসেন জানান, কুমিরটি গ্রামবাসীর কাছ থেকে উদ্ধার করে সদরে আনা হয়েছে। কুমিরের চিকিৎসা, খাবার ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই