আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন ড্যান ডব্লিউ মজিনা।
এ উপলক্ষে আগামী ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তার বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হবে। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এ বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স। ইতিমধ্যে সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাবেক ও বর্তমান দেশি-বিদেশি কূটনীতিক, ব্যবসায়ী নেতা, সুশীল সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আগামী জানুয়ারিতেই ঢাকায় নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্শিয়া স্টিফেন ব্লুম বার্নিক্যাটের যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঢাকায় দায়িত্ব আসেন ড্যান ডব্লিউ মজিনা। এর আগেও ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কনস্যুলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাংলাদেশে আসার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়ার কলেজে অধ্যাপনা করতেন মজিনা। মাত্র এক বছর সেখানে ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে ফিরে তিনি আবারো সেই অধ্যাপনায়ই যোগ দিচ্ছেন। ঢাকা মার্কিন দূতাবাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ এই সদস্য ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রদূত হিসেবে ২০১০ সাল পর্যন্ত আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলাতে দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে ফিরে অধ্যাপনায় যোগ দেন এবং এক বছরের মাথায় তাকে আবারো বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ ছাড়াও মজিনা দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, পাকিস্তান এবং আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়াতে মার্কিন দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কমকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, মজিনা ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্টেট ডিপার্টমেন্টের (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) কোনো অবস্থান জানা যায়নি।
কক্সবাজার: বাংলাদেশস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও দেশটির সঙ্গে আর্ন্তজাতিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ও বস্তি পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মজিনা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে মিয়ানমারে দু’দফা সফর করেছেন এবং জাতিসংঘের সেমিনারে বক্তব্যও রেখেছেন। কিন্তু মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট এতে কর্ণপাত করেননি। যার কারণে মিয়ানমারের ওপর আর্ন্তজাতিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রেখে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান ও তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয় নিয়ে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করা হবে।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির কর্মকর্তাদের নিয়ে দুপুরে বৈঠককালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে চলার আহ্বান জানান।
এ সময় রোহিঙ্গা নেতারা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরিত না করে তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসনের আহ্বান জানালে তিনি বিষয়টি গুরত্ব সহকারে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন।
মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক জান্তার চরম নির্যাতন, অত্যাচার, নিপীড়নের কথা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে রোহিঙ্গারা জানালে সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
বৈঠক শেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কুতুপালং ক্যাম্পের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও এনজিও সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এর আগে তিনি রামুর চেইন্দায় রোহিঙ্গা বসতি পরিদর্শন করেন।
মন্তব্য চালু নেই