মঙ্গলে জৈব অণুর সন্ধান
মঙ্গল গ্রহের মাটিতে জৈব অণুর সন্ধান পেয়েছে কিউরিওসিটি রোভার। মঙ্গলে মাটি খুঁড়ে মিথেন গ্যাসের অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছে রোভারটি। বুধবার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
জৈব অনুর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অণু রয়েছে। এগুলোর কোনটি প্রাথমিকভাবে কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত হয়। তবে জীবনের অস্তিত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন রাসায়নিক অণুর সংশ্লেষনেও জৈব অণু সৃষ্ট হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে মঙ্গলের আবহাওয়া জীবনের অস্তিত্বের জন্য অনুকূল নয়। তবে কয়েশ কোটি বছর আগে লাল এই গ্রহটিতে জীবনের জন্য অনুকূল পরিবেশ ছিল বলে প্রমাণ রয়েছে। নাসার গোড্ডারাড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে কর্মরত ক্যারোলিন ফ্রিসিনেট জানান, আমাদের ধারণা ৩শ কোটি ৮০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ শুরু হয়। । একই সময় মঙ্গলেও এই পরিবেশ ছিল্- পানি, উষ্ণ পরিবেশ ও জৈবপদার্থ।
সাধারণ ভূতত্ত্ব কিংবা অন্য কোনো তত্ত্ব দিয়ে মঙ্গলে পাওয়া এই মিথেনের ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে না, জানিয়েছেন গবেষকরা। তাদের মতে, ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়াসদৃশ জীবন্ত অণুজীবই মিথেনের উদ্ভবের কারণ। গবেষকেরা বলছেন, যদি জীবন্ত কোনো অণুজীব থেকে এই গ্যাস তৈরি হয়, তবে তা ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ, পৃথিবীতে ৯৫ শতাংশ মিথেন গ্যাস তৈরি হয় ক্ষুদ্র অণুজীব থেকে। এর পাশাপাশি অজৈবিক প্রক্রিয়াতেও এ ধরনের গ্যাস তৈরি হতে পারে। নাসার গবেষকেরা বলছেন, কিউরিওসিটিতে এখন জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে বারবার পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
মার্স সায়েন্স ল্যাবরেটরির গবেষক ড্যানি গ্লাভিন বলেছেন, ‘মঙ্গলের মাটিতে আমরা কয়েক দশক ধরেই অণুজীবের সন্ধান করছিলাম। এটি সত্যিই অসাধারণ একটি আবিষ্কার। মঙ্গলের মাটিতে আমরা প্রথমবারের মতো জৈব উপাদানের খোঁজ পেলাম। এটা আমাদের জীবনের মূল রাসায়নিক উপাদান খুঁজে বের করার উত্সাহ আরও বাড়িয়ে দেবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে, এই জৈব উপাদানের উত্স কোথায় তা খুঁজে দেখা।’
২০১২ সালে মঙ্গলে অবতরণের পর থেকে মঙ্গলের মাটিতে অণুজীব খোঁজার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রোবটযান কিউরিওসিটি। ২০২০ সাল পর্যন্ত পরীক্ষা চালিয়ে যেতে হবে এই রোবট যানটিকে।আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আবারও গর্ত করে তা থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে কিউরিওসিটি। এরপর তা পরীক্ষা করে মিথেন কিংবা জৈব অণুর অস্তিত্বের বিষয়ে আরও নিশ্চিত ফল জানাবে।
মন্তব্য চালু নেই