মগবাজার ফ্লাইওভারের আরেক দুয়ার খুললো
মগবাজার মৌচাক ফ্লাইওভারের আরও একটি অংশে যান চলাচল শুরু হয়েছে। সকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালসড়ক উদ্বোধন করেন।
বেলা ১১টার কিছুক্ষণ পর ফিতা কেটে উড়ালসড়কটি উদ্বোধন করার পর ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত গাড়িতে করে যান মন্ত্রী। এর মধ্য দিয়ে প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের দুটি অংশে যান চলাচল শুরু হলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩০ মার্চ উড়াল সড়কটির সাত রাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল পর্যন্ত অংশ উদ্বোধন করেন। সেই অনুষ্ঠানে তিনি পর্যায়ক্রমে বাকি অংশগুলোও খুলে দেয়ার কথা জানান।
ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাড়ে পাঁচ মাসের মাথায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খুলে দিলেন উড়াল সড়কটির আরেকটি অংশ। তিনি জানান, মোট তিনটি প্যাকেজে চলা এই প্রকল্পের দুটো প্যাকেজ উদ্বোধন করা হল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩০ মার্চ প্যাকেজ ডব্লিউ-০৪ উদ্বোধন করেন। আজ প্যাকেজ ডব্লিউ-০৬ উদ্বোধন হল। বাকি রইল ডব্লিউ-০৫। এটি কাজ শেষে আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব আবদুল মালেক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী শ্যামা প্রসাদ অধিকারীসহ মন্ত্রণালয় ও এলজিইডির ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা।
রাজধানীর মগবাজার, মৌচাক ও মালিবাগ অংশে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হয় ফ্লাইওভারটির। নির্মাণ কাজ শুরুর দুই বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৫ সালের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
তবে মাটির নিচে সেবা সংস্থাগুলোর লাইন সরানোসহ নানা জটিলতা এবং সড়কের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কারণে নির্মাণকাজের সময় বাড়ানো হয় তিন দফা। সবশেষ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। মেয়াদ বাড়ার পর প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে এক হাজার ২১৯ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে সরকার।
সব মিলিয়ে আট দশমিক সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেনের এ ফ্লাইওভারে ওঠা-নামার জন্য তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, সোনারগাঁও হোটেল, মগবাজার, রমনা (হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা), বাংলামোটর, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস ও শান্তিনগর মোড়সহ উঠানামার জন্য মোট ১৫টি লুপ বা র্যাম্প রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময় আগামী জুনের মধ্যেই কাজ শেষ করার বিষয়ে আশাবাদী তিনি। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত উড়াল সড়কটির ৪০ শতাংশ যানচলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। বাকি অংশের ৬০ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় অন্য উড়ালসড়কের তুলনায় কম। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এই ফ্লাইওভার নির্মাণে প্রতি মিটারে ব্যয় হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা সাম্প্রতিক সময়ে নির্মিত অন্যান্য ফ্লাইওভারের নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে কম।
পুরো উড়ালসড়কটি চালু হলে এই এলাকায় যানজট নিরসনে তা ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো একটি ফ্লাইওভার গোটা রাজধানীর যানজট নিরসন করতে পারবে না। অনেক জায়গায় যানজট বাঁধাতেও পারে কোনো ফ্লাইওভার। তবে মাস্টারপ্ল্যানে যতগুলো ফ্লাইওভার হওয়ার কথা, তার সবগুলো চালু হলেই যানজট নিরসন হবে।’
মন্তব্য চালু নেই