ভোলার চরাঞ্চলে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস ঝুঁকিপূর্ণ

পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় দুর্যোগ ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর মধ্যবর্তী চরাঞ্চলের ৩ লাখ মানুষ। মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরের বাসিন্দাদের প্রায় ৯০ ভাগ ঝড়-বাদলে অরক্ষিত থাকলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তবে চরাঞ্চলের বিপদগ্রস্ত এসব মানুষদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনার কাজ চলছে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক।সূত্রে জানা যায়, অব্যাহত নদী ভাঙনের কারণে ভোলার বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে দিন দিন জনবসতির সংখ্যা বাড়ছে। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর মধ্যবর্তী অর্ধশতাধিক চরে প্রায় ৩ লাখ মানুষ বাস করে। এর মধ্যে কলাতলীর চর, মাঝের চর, সিকদার চর,চরপাতিলা,চরমনোহরসহ জনবসতি আছে এমন ১০টি চরে কোন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র বা মাটির কিল্লা নেই। এই চরগুলোতে লক্ষাধিক মানুষ যুগ যুগ ধরে ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে।চরাঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, বন্যার সময় নানা সমস্যায় পড়তে হয়। এলাকায় কোন আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় কষ্টে দিন পার করতে হয়। দু’একটি যা রয়েছে তাও জড়া-জীর্ণ।দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা অন্যতম এলাকা চর কুকরী-মুকরী। এখানকার ১৫ হাজাররে মধ্যে মাত্র ২ হাজার মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা আছে বলে জানালেন এই জনপ্রতিনিধি। চর কুকরী-মুকরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে মাত্র দুই হাজারের কিছু বেশি মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা আছে। বাকি প্রায় তের-চৌদ্দ হাজার মানুষকে আশ্রয়হীন অবস্থায় থাকতে হয়।সাগর পাড়ের অপর ইউনিয়ন ঢালচরের ১২ হাজার মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র ১টি আশ্রয়কেন্দ্র। ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম পাটোয়ারী জানান, বন্যার সময় এলাকার মানুষের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই।শুধু চরাঞ্চল নয় ঝড়-বন্যায় জেলার জনসংখ্যার অর্ধেক আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরে রয়েছে। তাই দুর্যোগ ঝুঁকি এড়াতে জনসচেতনতায় কাজ করছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি ভোলার উপ-পরিচালক মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ৮-৯-১০ মহাবিপদ সংকেত হলে ৫০ শতাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে। বাকিদের ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির পরিচালক (প্রশাসন) কে. এম. তারিকুল ইসলাম জানান, চরাঞ্চলের মানুষকে সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি মোকাবেলা করে থাকতে হয়। তাই এ বিষয়ে তাদের সতর্ক করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।তবে ভোলার চরাঞ্চলের বিপদগ্রস্ত মানুষদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনার কাজ চলছে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম রেজা। তিনি বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আরো বেশি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করার প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, জেলায় ২১ লাখ মানুষের আশ্রয়ের জন্য ২শ’ ৫০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও ৫শ’ ১২টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি আশ্রয় কেন্দ্রকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই