ভোটের দায়িত্ব থেকে ‘রেহাই পেলেন’ সেই ১১ জন

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পাওয়া ১১ কর্মচারী আবেদন করে তাদের নাম কাটিয়েছেন। তারা সবাই মিরপুর শাহ আলী কলেজের দারোয়ান, পিয়ন, মালি, আয়া ও ঝাড়ুদারসহ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী।

শুক্রবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসার মো. শাহ আলম তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অব্যাহতি দিয়েছেন বলে রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা যায়।

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার ঘটনাটি শাহ আলী কলেজের অধ্যক্ষের কারণে হয়েছে। রিটার্নিং অফিস থেকে তার কাছে পোলিং অফিসারের যে তালিকা চাওয়া হয়েছিল সেখানে চতুর্থ শ্রেণীর এই ১১ জনের নাম ছিল। এ ঘটনার কারণে কলেজের অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে বলেও জানা যায়।

রিটার্নিং অফিসার শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনার জন্য কলেজ অধ্যক্ষ দায়ী। তাকে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। একজন শিক্ষকের সঙ্গে চতুর্থ শ্রেণীর কোনো কর্মচারী কীভাবে কাজ করতে পারে, এটা হতে পারে না। কলেজ থেকে পাঠানো তালিকায় ওই ১১ জনের নাম ছিল বলেই আমরা তাদের নিয়োগ দিয়েছি। সেখানে তাদের পদবীর বিষয়টি উল্লেখ ছিল না।’

বিষয়টি ভুল হয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে বলি। তারা পোলিং অফিসার হিসেবে যোগ্যদের তালিকা সিডিতে করে পাঠায়। পরে শুধু সিডি থেকে কপি করে নাম বসিয়ে দেই। এক্ষেত্রে সে সমস্যাটাই হয়েছে।’

দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেয়ে দারোয়ান শাহজাহান বলেন, ‘আমরা ওই কাজের যোগ্য না। ভুল করেই হয়তো আমাদের নাম দিয়ে দেয়া হয়েছে। অব্যাহতি পেয়ে এখন মাথার ওপর থেকে বড় বোঝা সরে গেছে।’

এরআগে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও রিটার্নিং অফিসারের কাছে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন এই কর্মচারীরা।

আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, আমরা চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। ইতোপূর্বে আমরা কখনও রাষ্ট্রীয় অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজে দায়িত্ব পালন করিনি।নির্বাচনী বুথে কালি লাগানো ছাড়া কোনো কাজ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অতএব, ঢাকা উত্তর সিটি থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে আমাদের অব্যাহতি দেয়া হোক।

কর্মচারীদের আবেদনে পর কলেজ অধ্যক্ষ ময়েজ উদ্দিনও সুপারিশ করে লেখেন, তারা কেবল কালির ব্যবহার ছাড়া আর কিছু করতে পারবেন না। তারা অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন।

সাধারণত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় কর্মকর্তা ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের নির্বাচনে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে চতুর্থ শ্রেণীর কারো দায়িত্ব পালনে কোনো বিধি নিষেধ নেই।

শনিবার থেকে উত্তরের ১৮ হাজারেরও বেশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে বলেও জানান শাহ আলম।

উল্লেখ্য, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মিরপুর হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজের শিক্ষকসহ সবাইকে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয় ইসি। এর মধ্যে পিয়ন, ঝাড়ুদার, মালি, সুইপার, আয়া, দারোয়ানসহ ১১ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পান। বৃহস্পতিবার ১১ জন কর্মচারী নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে অক্ষমতা জানিয়ে ইসিতে আবেদন করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের অব্যাহতি দেন।



মন্তব্য চালু নেই