‘ভেবেছিলাম ছেলে আলেম হচ্ছে, হয়েছে জঙ্গি’

গাজীপুরের পাতারটেক আস্তানায় নিহত সন্দেহভাজন সাত জঙ্গির একজনকে নিজের ছেলে ইব্রাহিম বলে শনাক্ত করেছেন ঢাকার বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আজিমউদ্দিন। তিনি জানান, জামায়াতপন্থিদের পরিচালনায় থাকা তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় পড়তেন ইব্রাহিম। এই মাদ্রাসা থেকে এইসএসসি সমমানের আলিম পরীক্ষা পাস করেছিলেন এই তরুণ।

ঢাকা মহানগর পুলিশ নিহতদের ছবি প্রকাশ করে তাদের বিষয়ে তথ্য চাওয়ার পর এদের মধ্যে নিজের সন্তানকে দেখে শনাক্ত করেন আজিমউদ্দিন। এরপর ছুটে যান গাজীপুরে। বিকালে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন তিনিও।

ছেলের ধীরে ধীরে অতিধার্মিকতায় জড়িয়ে পড়া এবং এক পর্যায়ে জঙ্গি সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আজিমউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে মোবাইল ফোনে কোরআন হাদিস পড়তো। আমি খুশি হতাম। ভেবেছিলাম সে আলেম হচ্ছে। কিন্তু সে যে এসবে জড়াবে তা আমার ভাবনাতেও ছিল না।’

তিন মাস আগে ঢাকার মোগরটুলি এলাকার বাসা থেকে উধাও হন ইব্রাহিম। এরপর তার ব্যবহার করা একটি মোবাইল সিম খুঁজে পান বাবা। সেই সিমের ম্যাসেজবক্সে জঙ্গিবাদের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়। এরপর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আজিমউদ্দিন। ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেন তিনি। পরে বংশাল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।

সাধারণ ডায়েরি এবং তার জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য জানার পর পুলিশ কী করেছে জানতে চাইলে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী এই মুহূর্তে কথা বলতে পারবেন না বলে পরে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি বলেন, ‘এখন প্রতীমা বিসর্জন নিয়ে ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলবো।’

ইব্রাহিমের বাবা গাজীপুরে বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল ইব্রাহিম। আমি বুঝতে পারিনি সে এমন হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘যারা আমার কোমলমতি সন্তানকে জঙ্গি বানিয়েছে তাদের আমি শাস্তি চাই। আমি চাই আর কারো সন্তান যেন এ ধরনের জঙ্গি সংগঠনে না জড়ায়। এ জন্য আমি সরকারের কাছে কঠোর পদক্ষেপ আশা করছি।’



মন্তব্য চালু নেই