ভেবেছিলাম আর অভিনয় করব না, জিনই সিনেমায় ফেরার কথা ভাবতে শিখিয়েছে

অনেকদিন পর র‌্যাম্পে ফিরে কেমন লাগছে?
দারুণ! তবে আমি কখনও শাড়ি পরে র‌্যাম্পে হাঁটিনি। সেভাবে দেখতে গেলে অভিনয় জীবনেও খুব কম শাড়ি পরার সুযোগ পেয়েছি। যে চরিত্রগুলোর ‘লুক’ এথনিক ছিল, সেগুলো বেশিরভাগ পঞ্জাবি বা মুসলিম চরিত্র। তাই সালোয়ার-কামিজই বেশি পরতে হয়েছে। র‌্যাম্পে উঠে মনে মনে প্রার্থনা করছিলাম যাতে পড়ে না যাই!

শাড়িতে কি একদমই স্বচ্ছন্দ নন?
ঠিক তা নয়। আমি র‌্যাম্পে আগেও যখন হেঁটেছি, নার্ভাস লেগেছে। রোজকার জীবনে সত্যিই তেমন শাড়ি পরা হয় না। তবে সংযুক্তার শাড়িটা দু’ভাগে। এ রকম আগে কখনও দেখিনি। একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তারপর জানতে পারলাম এটাকে মেখলা চাদর বলা হয়। দেখিয়ে দেওয়ার পর বুঝলাম, পরাটাও খুব একটা মুশকিলের নয়। দেশের হ্যান্ডলুম সেক্টরের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। হাজার হাজার কারিগর রোজগারের রাস্তা হারাতে চলেছেন। সে কথা ভাবলে মনে হয়, আমাদের আরও বেশি করে ভারতীয় পোশাক পরা উচিত। তাহলে অন্তত ওদের রোজগারটা বন্ধ হবে না।

আপনাকে ফের পরদায় কবে দেখা যাবে?
আশা করছি, আর তিন-চার মাসের মধ্যেই। আমার নতুন ছবি ‘ভাইয়াজি সুপারহিট’ প্রায় তৈরি। আমি ‘বাবলি’ শব্দটা খুবই অপছন্দ করি। কারণ আমার নাম শুনলে প্রথমেই লোকে এই শব্দটা ব্যবহার করে। কিন্তু এতদিন পর এমন একটা ছবি করছি, যেখানে চরিত্রটাও তেমনই। আমি অবশ্য তাতেও এক্সাইটেড! ছবিটা মোটেই সিরিয়াস নয়। তাই শ্যুটিং করতে মজা লেগেছে। বিয়ের ঠিক পরেই শ্যুটের জন্য ফিরতে হয়েছিল। চরিত্রটা এক দিক থেকে আমার অভিনীত অন্য চরিত্রগুলোর চেয়ে আলাদা।

কোন দিক থেকে?
চরিত্রের লুক’টা একদম দেশি। ওই যে বলছিলাম, আগে ছবিতেও শাড়ি পরার সুযোগ পাইনি। এবার সেই আফশোসটা মিটে গেল। শাড়ি, মাথায় সিঁদুর, গলায় মঙ্গলসূত্র, সবই রয়েছে। শ্যুটিংয়ের সময় বার বার আয়নায় নিজেকে দেখতাম আর ভাবতাম, বাহ্‌! বেশ নতুন লাগছে!

নতুন লাগার তো কথা নয়। আপনার তো সদ্য বিয়ে হয়েছে।
(জোর হাসি…) ঠিকই বলেছেন! হয়তো এটা পোস্ট ম্যারেজ এফেক্ট। সব একই দিকে এগোচ্ছে। জোক্‌স অ্যাপার্ট, আমি এ ধরনের গ্রাম্য চরিত্র খুব একটা পাইনি। চিরকাল আমায় শুনতে হয়েছে, আমি নাকি আরবান চরিত্রে বেশি মানানসই। তাই বলতে পারেন, ছবিটা আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। ইট ইজ মাই রিভেঞ্জ টু অল দোজ পিপ্‌ল।

শেষ যে ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, সেটা একদমই চলেনি। এবার নার্ভাস লাগছে?
একদমই না। কোনও রকম চাপে নেই, কারণ আমি এই ছবির প্রযোজক নই (জোর হাসি…)। তবে প্রায় সব অভিনেতাই তাঁর প্রথম প্রযোজিত ছবিতে সাফল্যের মুখ দেখেননি। আমি বিষয়টা পজিটিভলি নিয়েছি। কারণ সাফল্য থেকে যত না শিখি, ব্যর্থতা থেকে তার চেয়ে অনেক বেশি শিখি।

বিবাহিত জীবন কেমন চলছে?
আমি খুবই লাকি যে এমন একজনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে, যে আমায় সিনেমায় ফেরার কথা ভাবতে শিখিয়েছে। জিন প্রায় জোরই করেছে বলতে পারেন। কারণ আমি ভেবেছিলাম, আর অভিনয় করব না। অঁতপ্রনর হয়েই খুশি ছিলাম। কিন্তু দেখলাম, সিনেমায় ফিরে ভালই লাগছে। তবে বিবাহিত জীবনটা ব্যালান্স করতে একটু অসুবিধে তো হচ্ছেই। কারণ বিয়ের পর থেকে আমি ভারতেই রয়েছি শ্যুটিংয়ের জন্য।

বিয়ে বা সন্তান, কোনও কিছুই এখন অভিনেত্রীদের জন্য বাধা নয়। সম্প্রতি করিনা কপূর খান সেটা ফের প্রমাণ করে দিলেন…।
আই থিঙ্ক করিনা ইজ আ রকস্টার। তবে শুধু ও নয়। ভারতের অনেক মেয়েই কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন রীতিমতো কাজ করেন। হয়তো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এটা নতুন। কিন্তু হাজার হাজার মেয়ে এটা প্রত্যেকদিন করছেন। সেটা তাঁদের কাছে কোনও বড় ব্যাপার নয়। তাঁরা সেলেব নন বলে কেউ তাঁদের কদর করে না। অথচ তাঁরা প্রত্যেকে সুপারওম্যান। কতজন ছেলে ঘর-সংসার সামলে বাইরের কাজ করতে পারেন বলুন তো!

ইদানীং নারীকেন্দ্রিক ছবির জয়জয়কার। এই সময় কামব্যাক করলে কি আরও নতুন ধরনের চরিত্র পাবেন বলে আশা করছেন?
কোনও ছবিকেই আমি নারীকেন্দ্রিক মনে করি না। আমার মনে হয়, গল্পটাই আসল। কেরিয়ারের শুরুর দিকে ‘কেয়া কহেনা’ করেছিলাম। কোনওদিন মনে হয়নি ছবিটা নারীকেন্দ্রিক। গল্প ভাল লাগলে তবে ছবি করি। সিনেমা আমাদের দেশের মানুষের উপর বিশাল প্রভাব ফেলে। সে ফুটপাথে থাকা লোকদের উপর হোক বা বড়লোক বাড়িরই। তাই বিনোদনের পাশাপাশি গল্পে একটা ইতিবাচক বার্তা থাকলে ভাল হয়। যদিও সিনেমায় সেটা কোনও ধরাবাঁধা নিয়ম হতে পারে না। পরিচালক নিজের মতো ছবি বানাতেই পারেন।
এ বছরে কি চুটিয়ে কাজ করবেন নাকি বিবাহিত জীবন উপভোগ করবেন?

আমি কোনও কিছুই আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখি না। জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলো উপভোগ করি আর আশা করি যেন বছরটা ভাল কাটে। এবারও তাই করছি। টাচউড, লাইফ হ্যাজ বিন গুড! তবে বিয়ের পরেই যেন কাজে বেশি ব্যস্ত হয়ে গেলাম! টানা শ্যুটিং করছি। ক্রিসমাস বা নিউ ইয়ার, কোনওটাই বাইরে কাটানো হল না। কাজ ছিল, তাই ভারতেই ছিলাম। অথচ কেরিয়ারের প্রথমদিকে যখন ‘সোলজার’ বা ‘দিল সে’ দিয়ে শুরু করেছিলাম, তখনও এই উৎসবের দিনগুলোয় কাজ করিনি। বিদেশে কাটিয়েছি। বিয়ের পর প্রথম ক্রিসমাসই জিনের সঙ্গে কাটাতে পারলাম না। হয়তো এখন থেকে কাজেই বেশি ব্যস্ত থাকব। কে জানে!



মন্তব্য চালু নেই