ভিত্তিপ্রস্তর হয়েছে ১ বছর আগে, ব্রিজ তৈরি হবে কত বছর পরে ?

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের এক বছর পার হলেও মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর এলাংখালি ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি এখনো। মাগুরা-২ (মহম্মদপুর-শালিখা) আসনের সাংসদ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট বীরেন শিকদার গত তিনটি নির্বাচনেই মধুমতি নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। অবশেষে  গত বছরের ৭ নভেম্বর উপজেলা সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের এক বছর পার হলেও কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ এ অঞ্চলের বাসিন্দারা।

দীর্ঘদিনেও ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ব্রিজের অভাবে মহম্মদপুর উপজেলার বাসিন্দাদের মাগুরা জেলা সদর হয়ে প্রায় ৪০কিলোমিটার বেশি পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, মাদারীপুর গোপালগঞ্জসহ এ অঞ্চলের জেলাগুলোতে যাতায়াত করতে হয়। দূর পাল্লার যাত্রীদের পাশাপাশি প্রতিদিনের কাজে নদীর দুই পাড়ের অসংখ্য মানুষকে মহম্মদপুর ও ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে বিকল্প হিসেবে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পারাপার হতে হয়। আর এ ক্ষেত্রে প্রায়ই ঘটে ছোট- বড় দুর্ঘটনা।

স্থানীয়রা জানান-যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে মহম্মদপুরবাসী দীর্ঘদিন ধরে মধুমতি নদীর ওপর এলাংখালি ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। জনগণের দাবির মুখে প্রতিটি নির্বাচনের আগেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এখানে একটি  ব্রিজ নির্মাণের  প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। পরে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে এলাংখালি ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের অনুমোদন হয়  জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)সভায়। ২০১৩ সালের ৭ নভেম্বর স্থানীয়  সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার  এ ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এলাংখালি ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের কোনো কাজই শুরু হয়নি।

ফলে দূরপাল্লার যাত্রীদের পাশাপাশি দুপাড়ের স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন বাধ্য হয়ে মালামাল নিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে বাধ্য হচ্ছেন। সময় অপচয়ের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ এ পারাপারের ক্ষেত্রে প্রায়ই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, শাহীন আলমসহ ভুক্তভোগী একাধিক এলাকাবাসী জানান, এলাংখালি ঘাটে একটি ব্রিজের অভাবে মহম্মদপুর বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হয়েছে। উপজেলা সদরে বসবাস করেও তারা আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে পিছিয়ে রয়েছেন।

তারা বলেন, এলাংখালি ঘাটে ব্রিজ মহম্মদপুরবাসীর প্রাণের দাবি। তারা আর কোনো প্রতিশ্রুতি শুনতে চান না। অবিলম্বে ব্রিজ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন দেখতে চান।

এ ব্যাপারে মাগুরা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী  মো. ইফতেখার আলী জানান- এলাংখালি ঘটে ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ার শেষে মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আনুমোদন পেলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

এ ব্যাপারে বীরেন শিকদার বলেন, ‘খুব শিগগিরই ব্রিজের টেন্ডার কাজ সম্পন্ন হবে। টেন্ডার সম্পন্ন হলে দ্রুততার সঙ্গে নির্মাণ কাজ শেষ হবে।’



মন্তব্য চালু নেই