ভিডিও করা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ফাঁস করার হুমকি দিয়ে ৯ মাস ধরে ধর্ষণ!
ভিডিওয় তুলে রাখা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ফাঁস করার হুমকি দিয়ে ন’মাস ধরে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করলেন যোধপুর পার্কের এক তরুণী। মঙ্গলবার লেক থানায় সল্টলেকবাসী এক ব্যবসায়ী এবং তাঁর স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযুক্ত রাকেশ চৌধুরীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ভিডিওয় তুলে রাখা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ফাঁস করার হুমকি দিয়ে ন’মাস ধরে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করলেন যোধপুর পার্কের এক তরুণী। মঙ্গলবার লেক থানায় সল্টলেকবাসী এক ব্যবসায়ী এবং তাঁর স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযুক্ত রাকেশ চৌধুরীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
পুলিশের কাছে অভিযোগে ওই তরুণী জানিয়েছেন, গত বছর জুন মাসে এক বন্ধুর বাড়িতে রাকেশ এবং তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। পরে একদিন রাকেশ তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি ক্লাবে পার্টিতে যাওয়ার অনুরোধ করেন। সেখানে তাঁর বন্ধুরা থাকবেন বলেও জানিয়েছিলেন অভিযুক্ত। তিনি রাকেশের কথায় বিশ্বাস করে সেই পার্টিতে যান। পার্টি কিছুক্ষণ চলার পর রাকেশ তাঁকে পানীয় নিতে অনুরোধ করেন। তরুণীর বয়ান অনুযায়ী, দু’তিন বার ওই পানীয় খাওয়ার পর তিনি অসুস্থ বোধ করেন এবং বাড়ি ফিরে যাবেন বলে ঠিক করেন। রাকেশ জানিয়েছিলেন, নৈশভোজের পর তাঁকে বাড়িতে নামিয়ে দেবেন। কিন্তু বাড়িতে না নামিয়ে রাকেশ তাঁকে নিয়ে যান ইএম বাইপাসের ধারে একটি গেস্টহাউসে এবং যেখানে তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগপত্রে ওই তরুণী জানান, এই ঘটনার পরিণতি কী হবে, তা ভেবে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং সেকারণে অভিযুক্তকে তিনিই অনুরোধ করেন, ওই ঘটনার কথা কাউকে না বলতে। তিনি নিজেও কাউকে কিছু বলেননি। তবে ঠিক করেছিলেন, রাকেশের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখবেন না। ঘটনার পরদিন সন্ধ্যায় রাকেশ তাঁকে ফোন করলেও তিনি প্রথমে তা ধরেননি। পরে অভিযুক্ত অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন করায় তিনি তা ধরেন।
তরুণীর দাবি, রাকেশ তাঁকে দেখা করতে বলেন। তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে রাকেশ ব্ল্যাকমেলিংয়ের হুমকি দেন। তাঁকে জানানো হয়, আগের রাতে কী কী ঘটেছে, সেই সব দৃশ্যের ভিডিও রয়েছে। কথা না শুনলে সেটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশকে তরুণী জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরে শারীরিক নির্যাতনের জেরে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। অভিযুক্তকে তা জানালে গর্ভপাত করতে বলা হয়। তা না করলে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ভিডিও ইন্টারনেটে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। গর্ভপাত করেন তিনি। এরপরও ব্ল্যাকমেলিংয়ের জেরে তাঁকে রাকেশের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীয়ের মতো বিভিন্ন পার্টিতে যেত হতো বলে তরুণীর দাবি। এরপর আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে অভিযুক্তের স্ত্রীকে তিনি জানান বিষয়টি। তরুণীর দাবি, অভিযুক্তের স্ত্রী তাঁকে অপমান করে জানান, এ সবই টাকা হাতানোর ফন্দি! গত মার্চে আবার গর্ভপাত করান ওই তরুণী।
ধর্ষণের অভিযোগ জানাতে এত দেরি হল কেন, এ প্রশ্ন প্রায়শই সামলাতে হয় অভিযোগকারিণীদের। সে কথা মাথায় রেখেই অভিযোগপত্রে তরুণী লিখেছেন, দেরিতে অভিযোগ জানানোর জন্য ক্ষমা চাইছেন। এতদিন তিনি ধীরে ধীরে মানসিক জোর সঞ্চয় করেছেন যাতে রাকেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে শিক্ষা দিতে পারেন, যাতে ভবিষ্যতে কোনও মেয়ের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ কেউ না করতে পারে।
মন্তব্য চালু নেই