ভারতে ফিরতে চান অনুপ চেটিয়া
দীর্ঘদিন বাংলাদেশের কারাগারে বন্দী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া আবারো নিজ দেশে ফিরে যাওযার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এবার তিনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ভারতীয় হাইকমিশনের কনস্যুলার জেপি সিং অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে দেখা করে তার দেশে ফেরার আগ্রহের কথা জানতে চাইলে অনুপ এ ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এর আগে গত বছরের মে মাসে নিজ দেশে ফেরার আগ্রহরে কথা জানিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দেন অনুপ চেটিয়া। চিঠিতে তিনি বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য করা আবেদন প্রত্যাহারের কথাও বলেছিলেন।
ওই সময় অনুপ চেটিয়া রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিরাপত্তা হেফাজতে ছিলেন। ওই কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার করা আবেদন ১৩ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
অনুপ চেটিয়া রাজশাহী কারাগারে থাকা তার দুই সহচর লক্ষ্মীপ্রসাদ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকে নিয়ে তিনি নিজ দেশে ফিরতে চান বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন।
অনুপ চেটিয়াকে ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং বিদেশি মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তিনটি মামলায় তাকে যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তার সাজার মেয়াদ শেষ হয়।
অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করার জন্য ওই দেশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ ছিল। কিন্তু ২০০৩ সালের ২৩ আগস্ট রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন অনুপ চেটিয়া। এ কারণে তাকে হস্তান্তরে আইনি জটিলতা ও দুই দেশের মধ্যে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকার কথাও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের স্বাধীনতার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় উলফা। এরপর দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সশস্ত্র তৎপরতা চালায় সংগঠনটি।
ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী, ২০০৯ সালের শেষ দিকে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়াসহ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব নেতাকে বাংলাদেশ থেকে ধরে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ২০১০ সাল থেকে দিল্লিতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উলফার শান্তি আলোচনা চলছে।
মন্তব্য চালু নেই