ভারতকে যথার্থ জবাব দেয়ার অপেক্ষায় দুর্দান্ত এক বাংলাদেশ !

স্বপ্ন নয়, বাস্তবতার সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। বড় বড় তারকাদের রেকর্ড ভাঙাটাকে যেন অভ্যাসে পরিনত করে ফেলেছেন তামিম, সাকিব, মুমিনুল, ইমরুলরা। কিছুদিন আগেও এ দেশের ক্রিকেট প্রেমিরা হিসেব করতেন ‘কয়টা বড় দলকে আমরা এ পর্যন্ত হারাতে পেরেছি, আর কটা বাকি!’ বছরের পর বছর চাতক পাখির মত তাকিয়ে থাকতে হত একটি বিজয়ের জন্য। বাংলাদেশ বড় কোন দলকে হারালে বলা হত ‘অঘটন’। আর আজ? হিসাবটা বদলে গেছে। টাইগারদের গর্জন ও আক্রমনে এখন সমান ধার। এখন আর অঘটন নয়, সবই স্বাভাবিক ঘটনা। মানুষ ভাবনা শুরুই করে এখন ‘বাংলা ওয়াশ’ দিয়ে , ভাবে ‘এবার কার পালা’ তারপর রুপকথার গল্পের মত এক একটি বাস্তবতা, আর তালিকায় যুক্ত হয় নতুন একটি নাম।

অতিথিদের আপ্যায়নে বাংলাদেশ দিন দিন সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠছে। ব্যাটে-বলে এই আপ্যায়নের তালিকায় এবার প্রতিবেশী ভারত।

‘ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত, দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত কিংবা বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপ সম্মৃদ্ধ ভারত’ যে নামেই ডাকুন না কেন টাইগাররা প্রস্তুত অতিথিদের যথাযথ আপ্যায়নে। এবারের বাংলাদেশ যে অন্যরকম এক বাংলাদেশ সেটা পাকিস্তান সিরিজেই কিছুটা বুঝে গেছে প্রতিবেশীরা। বাকিটা বুঝতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ওয়ানডে সিরিজ পর্যন্ত।

ফর্মের তুঙ্গে থাকা তামিমের সঙ্গি হতে পারেন ইনজুরির কবলে পড়ে বিশ্বকাপ ও পাক সিরিজ থেকে ছিটকে পড়া আনামুল হক বিজয়। সেরা দলে নিজেকে যোগ্য প্রমান করতে ভারতীয় বোলারদেরকে তিনি একহাত নেয়ার অপেক্ষায় এই টাইগার ওপেনার। আর তামিম ইকবাল ভারতের বিপক্ষে যেন একটু বেশিই সাবলীল। আর ইদানিং তার রান বন্যার ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে গত সিরিজ সেরা এই বাঁহাতির চেষ্টারও কমতি থাকার কথা নয়। ৩ নং এ খেলতে পারেন আরেক বাঁহাতি, রান কারিগর হিসেবে হঠাৎ আবির্ভুত সৌম্য সরকারতো রান করা ছাড়া অন্য কিছুই বুঝতে চান না। তার ব্যাটিং দেখে মনে হয় কমপক্ষে ৩০ রান না করে ক্রিকেটে আউট হওয়ার কোন নিয়মই নেই। ১০ ম্যাচে ৩৯.৮৮ গড়ে এ বাঁহাতির রান ৩৫৯। এর মধ্যে একটি করে শতক ও অর্ধশতকও আছে।

বিশ্বকাপে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরীর মালিক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪ নং এ দেয়াল হয়ে দাড়িয়ে যেতে পারেন ভারতীয় বোলারদের সামনে। পাকিস্তান সিরিজে রান না পাওয়ার ক্ষুদাটা ভারত সিরিজেই মেটাতে চাইবেন তিনি। ৫ নং জায়গাটা তো বাংলাদেশ ক্রিকেটের মি. ডিপেন্ডেবল, মুশফিকুর রহিমের এক অনবদ্য সৃষ্টির সাক্ষী হয়ে উঠেছে। ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট-মুশফিক-রান-সফলতা’ কথাগুলো যেন একই সুতোই গাঁথা একটি মালা। এর পরের নামটি যে ভারতীয়দের জন্য রিতিমত গলার কাটা হয়ে দাঁড়াবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সাকিব আল হাসান নামটি যেকোন দলের জন্যইতো দুঃচিন্তার।

এরপর লোয়ার মিডল অর্ডারের নির্ভরতার প্রতিক হয়ে উঠা সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন আর মাশরাফি বিন মুর্তজারা তো আছেনই। র‍্যাংকিং এ এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়, জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি, নান্দনিক ব্যাটিংয়ে ছন্দে থাকার আত্নবিশ্বাস আর ঘরের মাঠে গ্যালারি ভরা দর্শকদের ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ স্লোগানে আকাশ বাতার ভারি হওয়া পরিবেশে দেশপ্রেমে উজ্জেবিত এক দুর্দান্ত মাশরাফি বাহিনী যে ভারত বধের জন্য প্রস্তুত সেটার গুঞ্জন পৌছে গেছে এদেশের প্রতিটি ক্রিকেট প্রেমীর ভাবনায়।

অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকটা দিনের। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মত একটির পর একটি বিজয় আছড়ে পড়ুক ‘টাইগার স্কোয়াডের পদতীরে’ আর উল্লাসে মেতে উঠুক গোটা দেশ।



মন্তব্য চালু নেই