ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধের ৭টি উপায়

ব্রেস্ট ক্যান্সার সারা বিশ্বে জুড়েই একটি ভয়াল আকার ধারণ করেছে। প্রতি ৮ জনে ১ জন নারী ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে। কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, যেমন- জেনেটিক কারণ। কিন্তু আপনার ডায়েট ও লাইফ স্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে এই বিধ্বংসী রোগটির ঝুঁকি কমানো যায়। স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায় এমন কিছু পন্থার কথাই আজ আমরা জেনে নিই চলুন।

১। ক্যান্সার প্রতিরোধী খাবার খান

অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমাতে পারে। এর ফলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% পর্যন্ত কমে। মটরশুঁটি, তাজা ফল, আস্ত শস্য এবং ফ্ল্যাভনয়েড, ক্রুসিফেরাস ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট(ব্রোকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি) ও ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ সবজি খান। পেঁয়াজ, রসুন, পেঁয়াজ পাতা ইত্যাদি সবজিগুলো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র‍্যাডিকেলকে নিরপেক্ষ করে এবং ক্যান্সার কোষের বিভক্ত হওয়া প্রতিরোধ করে। এইধরনের সবজি কাঁচা খেলেই সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। সয়াবিন ও অন্য সয়া পণ্য যেমন- টফু ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। কিন্তু মিষ্টি স্বাদের ও রিফাইন্ড সয়া পণ্য যেমন- সয়া দুধ ও সয়া তেল এড়িয়ে চলুন। মনে রাখবেন চিনি ক্যান্সারের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। চিনি ক্যান্সার জিনকে সক্রিয় করে এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিতে জ্বালানী হিসেবে কাজ করে।

২। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন

যেসব নারীরা দৈনিক ৩০-৪৫ মিনিট ব্যায়াম করেন তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি যারা ব্যায়াম করেন না তাদের চেয়ে ২০-৪০% কমে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট সাধারণ ব্যায়াম যেমন- দ্রুত হাঁটার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।

৩। ওজন ঠিক রাখুন

গবেষণায় দেখা গেছে যে অধিক ওজন ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। ক্যান্সার ও ওজনের এই সম্পৃক্ততার জন্যই সবার উচিৎ দেহের স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখা।

৪। নিউট্রিশনাল সাপ্লিমেন্ট

অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করা যায়। পর্যাপ্ত মাত্রার ভিটামিন এ, ডি ও ই ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৫। গ্রিনটি পান করুন

গ্রিনটিতে ইজিসিজি (এপিগ্যালোক্যাটেচিন-৩-গ্যালেট) নামক উপাদান থাকে যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন গ্রিনটি পান করুন।

৬। ভালো ফ্যাট গ্রহণ করুন

বিভিন্ন ধরণের চর্বি ব্রেস্ট ক্যান্সারের উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই খারাপ ফ্যাট বর্জন করে ভালো ফ্যাট গ্রহণ করা উচিৎ। ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছের তেল খান এবং ওমেগা৬ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ভুট্টা, সূর্যমুখীর তেল ইত্যাদি কম গ্রহণ করুন।

৭। ধূমপান বর্জন করুন

যেসব নারীরা ধূমপান করেন বা ক্রমাগত পরোক্ষভাবে ধোঁয়ায় আক্রান্ত হন তাদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ৪০% এর ও বেশি। যাদের অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস আছে তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। যদি এই অভ্যাসগুলো আপনার থেকে থাকে তাহলে পরিত্যাগ করার চেষ্টা করুন।

টিপস

– রাসায়নিক সমৃদ্ধ পরিষ্কারক, কীটনাশক ব্যবহার এড়িয়ে চলুন

– প্লাস্টিকের সামগ্রিতে খাদ্য ও পানি সংরক্ষণ বাদ দিন

– থ্যালেট ও প্যারাবেন সমৃদ্ধ বিউটিকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার বন্ধ করুন

– ২০-৩৯ বছরের নারীদের প্রতি ৩ বছর পর পর স্তনের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো উচিৎ

– ৪০ ও তার অধিক বয়সের নারীদের প্রতিবছর স্তনের ডাক্তারি পরীক্ষা ও মেমোগ্রাম করানো উচিৎ



মন্তব্য চালু নেই