বোয়ালমারীতে কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মেছের আলীর বিরুদ্ধে নানা রকম অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা সচিবের নিকট এ সব অভিযোগ লিখিতভাবে জানিয়েছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে কলেজ অধ্যক্ষ এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলেজ থেকে একটি ম্যাগাজিন বের করার জন্য ফান্ড থেকে তিন লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত ম্যাগাজিন বের হয়নি এবং ওই টাকারও কোন হদিস নেই। কলেজের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকায় ক্রয় করা একটি ল্যাপটপ অধ্যক্ষ বাসায় নিয়ে রেখেছেন। তাঁর ছেলে ল্যাপটপটি ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য কলেজের আইসিটি ক্লাস করতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। ওই বিভাগের শিক্ষক তার ব্যক্তিগত ল্যাপটপ দিয়ে কোন রকম ক্লাস চালিয়ে নিচ্ছেন। এ বছর ৪২৫জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোচিং ক্লাস বাবদ অতিরিক্ত ৩০০ টাকা করে মোট এক লাখ ২৭ হাজার ৫০০ আদায় করেন কিন্তু কোন কোচিং ক্লাস হয়নি। কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রহমান পঞ্চাশ হাজার টাকা অনুদান দেন। সে টাকার কোন হিসাব না দিয়ে সব টাকা খরচ হয়ে গেছে বলে ছাত্রদের জানান। তিনি নিয়মিত কলেজে আসেন না। মাসে ২/৩ দিন মাত্র কলেজে আসেন। নিয়োগ পরীক্ষা নিতে এলাকার অন্য কলেজে আসলেও নিজের কলেজে আসেন না। এ সুযোগে কলেজের অন্য শিক্ষকরাও নিয়মিত কলেজ করেন না। আবার কয়েকজন শিক্ষক নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কলেজের মধ্যে বসবাস করে জমজমাট প্রাইভেট/কোচিং বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রেণিকক্ষে না পড়িয়ে এ সব শিক্ষক প্রাইভেট পড়িয়ে চলেছেন। অধ্যক্ষের আস্থাভাজন কর্মচারী ফরিদ খান, বাবলু শেখও নিয়মিত কলেজ করেনা। শিক্ষার্থীদের সাথে সব সময় দুর্ব্যবহার করে। কোন শিক্ষক, কর্মচারী অধ্যক্ষের কথা না শুনলে তাকে বদলি, বেতন বন্ধের হুমকি দেন। ইতিমধ্যে তিনি দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহ মো. জাহাঙ্গীরকে রাঙামাটি সরকারি কলেজে বদলি করেছেন। এ সব অনিয়ম দুর্নীতি দেখে উপাধ্যক্ষ নির্বান চন্দ্র মন্ডল বদলির চেষ্টা করছেন। অপরদিকে স্নাতক পর্যায়ে উপবৃত্তি প্রাপ্ত ২৬জন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ৩৯ হাজার টাকা কেটে নেয় কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজে উপস্থিত থাকা তিন কর্মচারী। অধ্যক্ষ এ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। কলেজের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অধ্যক্ষ কলেজে একটি অস্বস্থিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কোন কথার অমত করলে কারো রক্ষা নেই।
সকল অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ মো. মেছের আলী বলেন, ম্যাগাজিন ফান্ডের টাকা উত্তোলন করা হয়নি। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করা ল্যাপটপটি কলেজের কাজের জন্যই বাসায় রাখা হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কোচিং ক্লাস হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। কলেজের উন্নয়নমুলক কাজ-কর্ম, শিক্ষক আনার জন্য ঢাকায় যেতে হয় বলে মাঝে-মধ্যে কলেজে আসতে পারেন না। মাসে ২/৩ দিন আসার কথা ঠিক নয়। বদলি করে দেওয়া সহকারী অধ্যাপক কলেজটিকে ধংস করে দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।



মন্তব্য চালু নেই