বৃহস্পতিবার হেফাজত-ঐক্যজোটের হরতাল

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বৃহস্পতিবার হরতালের ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী ঐক্যজোট। হরতালের আগে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে তারা।
সোমবার হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফির সভাপতিত্বে এক বৈঠকে হরতালের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চট্রগ্রামের হাটহাজারীতে এ বৈঠকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর দুপুরে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বাংলামেইলকে হরতালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হেফাজত-ঐক্যজোট

বুধবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
এদিকে ইসলামী ঐক্যজোটের পক্ষ থেকেও একই দাবিতে হরতালের ডাক দেয়া হয়েছে।
দুপুরে রাজধানীর লালবাগে এক সমাবেশ শেষে সংগঠনের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ এ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বেশ কয়েকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে রোববার রাতে দেশে ফিরেন লতিফ সিদ্দিকী।

জানা যায়, রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও লতিফ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করা হননি।
রাত ৯টা ২৬ মিনিটের সময় ভিআইপি টার্মিনাল থেকে সাদা পোশাকধারীরা তাকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনালের ভেতর থেকে হাঁটিয়ে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে একটি সাদা প্রাইভেটে করে লতিফ সিদ্দিকী চলে যান।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউইয়র্কে বসবাসরত টাঙ্গাইলবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন লতিফ সিদ্দিকী।
এসময় তিনি বলেন, ‘আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করলো এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কীভাবে চলবে? তারাতো ছিল ডাকাত। তখন সে একটা ব্যবস্থা করলো যে আমার অনুসারীরা প্রতিবছর একবার একসঙ্গে মিলিত হবে। এর মধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি হজ আর তাবলীগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী, জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী, তবে তার চেয়েও বেশি হজ ও তাবলীগ জামাতের।’
হজ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা বলেন, ‘হজের জন্য ২০ লাখ লোক সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনো কাম নাই। এদের কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।’
এ সময় তাবলীগ জামাতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তাবলীগ জামাত প্রতিবছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদেরতো কোনো কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেন তিনি।
এরপরই দেশে-বিদেশে ব্যাপক তোপের মুখে পড়েন লতিফ সিদ্দিকী। ধর্মীয় অনভূতিতে আঘাত দেয়ার জন্য লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঢাকা ও দেশের ১৮টি জেলায় ২২টি মামলা হয়।
নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় প্রায় প্রতিটি মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
পরে তাকে মন্ত্রিসভা এবং দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই থেকে আর দেশে ফেরেননি লতিফ সিদ্দিকী। তিনি ভারতের অবস্থান করছিলেন বলে অনেকে দাবি করেন।



মন্তব্য চালু নেই