ভারি বর্ষণের আশঙ্কা

বৃষ্টিতে থমকে গেছে ঈদ আনন্দ

শনিবার ঈদের দিনের আনন্দ কিছুটা ম্লান করেছিল শ্রাবণের বৃষ্টি। বৃষ্টির দুর্ভোগ মেনেই সকালে ঈদ জামাতে শরিক হয়েছিলেন মুসল্লিরা। তবে বিনোদন কেন্দ্রগুলোসহ বাইরে গিয়ে আনন্দে অংশ নিতে বৃষ্টির কিছুটা ছাড় ছিল।

কিন্তু ঈদের পরের দিন রবিবারের আনন্দ আয়োজনে বাধা দিতে বৃষ্টি যেন আটঘাট বেঁধেই নেমেছে। রবিবার ঢাকায় সকাল থেকেই তুমুল বৃষ্টি, এ বৃষ্টির চিত্র সারা দেশেই। অপরদিকে সকাল ১০টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের সতর্ক বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

ঈদের পরের দিনও যে ঈদ, তাই ঈদের আনন্দ যেন থমকে দাঁড়িয়েছে শ্রাবণের বৃষ্টিতে।

নগরবাসী যারা ভাবছিলেন ঈদের শেষ দিনের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সপরিবারের হানা দেবেন, তারা যেন ঘরেই আটকা রইলেন। যারা বেরিয়ে পড়েছিলেন, বিনোদন তো দূরে থাক, বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে তাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।

দক্ষিণ বনশ্রীর বাসিন্দা মো. কাওসার হোসেন বলেন, ‘রবিবার সকালে বাচ্চাকে (৫ বছর) নিয়ে শিশু পার্কে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেডি হয়ে‌ দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, বৃষ্টি থামার নামই নেই। শিশুপার্কে যাবে বলে বাচ্চা কান্নাজুড়ে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে বাচ্চাকে শান্ত করেছি।’

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বেশির ভাগ মানুষই ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। তাই ঢাকার পথঘাট ফাঁকা, অন্যদিকে গ্রামগুলো যেন সরগরম।

শহর থেকে ভাই-ভাবী এসেছেন। ঈদের দিন নিজের সংসারের দায়িত্ব পালনের পর বোনটি ঠিক করে রেখেছে ঈদের পরের দিন কয়েক গ্রাম পরে বাবার বাড়ি গিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে ঈদের আনন্দে শামিল হবেন। গ্রামে গ্রামে নাইওর আনার তাড়াও যে ঈদের পরের দিন। কিন্তু বৃষ্টিতে সব পরিকল্পনা যেন ভেস্তে যেতে বসেছে।

বরিশালের বাখেরগঞ্জের ফরিদপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির জালাল উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি পটুয়াখালীর বাউফলের পাকডাল গ্রামে। আজ মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতির আসার কথা। কিন্তু বৃষ্টিতে তো আমরা বাইরই হতে পারছি না। তারপরও আমার ছেলেকে ভিজে ভিজে তাদের আনতে পাঠিয়েছি, বৃষ্টি থামলে নিয়ে আসবে। আমি ঢাকায় থাকি, আবার কবে দেশে আসব জানি না।’

রবিবার সকালে ভারি বর্ষণের সতর্কবাণীতে আবহাওয়া বিভাগ আরও জানিয়েছে, অতি ভারি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। সমুদ্রবন্দরের জন্য কোনো সতর্ক সংকেত না থাকলেও অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের কর্তব্যরত আবহাওয়াবিদ বলেন, দিনাজপুর, সৈয়দপুরের ওই দিকটা ছাড়া রবিবার সকাল থেকে সারা দেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী এ বৃষ্টি সারাদিনই থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই