বৃদ্ধা আঙ্গুলিতে চুমো দিয়ে চোখে লাগানোর রহস্য

এই ছবিটি দেখে খুব সহজেই বুঝা যাচ্ছে বৃদ্ধা আঙ্গুলতে চুমু দিয়ে তিনি তার দুই চোখে লাগাবেন। রহস্যটা কি এই কাজটির? কিছু কিছু আলেম সাহেবগন বলেন নবীর নাম শুনলে নবী সা. এর মহব্বতে চোখে লাগালে সোয়াব হয়। সেই সব আলেমগন সোয়াবের আশাতেই করেন এটা বুঝা যায়। আর কিছু কিছু আলেম সাহেবগন এটা সম্পর্কে জানেন না বিধায় বলেন এটা বেদাৎ। কোনটা মানা উচিত হবে সেটা বুঝ দিয়ে কেউ বলে না! আলেমগনদের ভিন্ন মতামত কোনটা মেনে নিবো। না জেনে বুঝে করলে বেদাৎই কেন হবে; সোয়াবই কেন হবে? আল্লাহর রাছুল সা. তো বলেছেন জাহেলের ইবাদতের চেয়ে মুমিনের ঘুম ভাল। ঠিক তেমনি অবুঝের বিচারের কোন মুল্য নেই এটাই স্বাভাবিক। ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি এই কাজটি। আযানের সময় রাছুল সা. এর নাম কানে আশার সাথে সাথেই আগে দেখতাম হাতের আঙ্গুল দুটিতে চুমো দিয়ে চোখে লাগানো হতো। মসজিদে একামতের সময়ও ঠিক একই কাজ করা হতো। কেন করছেন জিজ্ঞাসা করলে বলতেন সোয়াব হয়। আল্লাহ যে আদম আ. কে বলেছিলে হে আদম তুমি জাহান্নামের ফৌজ তৈরী কর। আদম আ. চিন্তা পরে জিজ্ঞাসা করলে হে কাকে আমি জাহান্নামে দিবো কয়জনকেই বা দিবো? তখন আল্লাহ বললেন প্রতি হাজারে ৯৯৯ জনকে জাহান্নামে দিবে। আল হাদীস তিরমিজি-৩১০৭। এই বিষয়টা জানতে চেষ্টা করার জন্য চেষ্টা করুর দেখবেন আল্লাহর হিসাব এখানেও মিলে যাবে। এরা শুধু সোয়াবের আশায় যা করার করে। মনে হয় এই সোয়াব খুব সস্তা জিনিষ। না বুঝে কোন কাজ করলে যেমন পাপ হয় না ঠিক তেমনি না বুঝে কোন কাজে সোয়াব হওয়ারও আসা করা উচিত নয়। বরং সেটাকে একটা ভাল কাজ বলে অবহিত করা যায়। বৃদ্ধা আঙ্গুলীতে চুমো খেয়ে চোখে লাগানোর কাজটা কেনই বা বেদাত হবে কেনই বা সোয়াব হবে। আমার মুরশিদ কিবলার কিতাবে এই ঘটনার উল্লেখ থেকে জানতে পারলাম সঠিক বিষয়টি। এবং রেফারেন্স এর জন্য খুজা শুরু করলাম কিতাবটি। খুজতে গিয়ে অনেকের কাছেই প্রশ্ন করেছি সঠিক উত্তর না পেয়ে আমার মুরশিদ কিবলার এক কিতাবে এই ঘটনার উল্লেখ দেখে তিঁনার কাছে জানতে চাইলাম রেফারেন্স কোথায় পাবো? তিঁনি বললেন হাদিসে কুদসিতে পেতে পার অথবা বার্নাবাসের গোসপেলে নামক কিতাবে। তারপর শুরু হলো বার্নাবাসের গোসপেল নামক কিতাবটি সেটির আর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। পরে অনেক কষ্ট করে খুজে পেলাম বার্নাবাসের বাইবেল নামক একটি কিতাব।

আফজাল চৌধুরী অনুদিত বার্নাবাসের বাইবেল কিতাবের ৪৪-৪৫ নং পৃষ্ঠা হতে উদৃতি করছি। ‘আদম নিজের পায়ের ওপর খাড়া হয়েই দেখলেন বায়ুমন্ডলে সূর্যের মত দেদীপ্যমান একটি বচন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নাই, মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল। এরূপ দেখে আদমের অধর স্পন্দিত হলো, তিনি শুধালেন, ‘অসীম শুকরিয়া হে আমার মাবুদ আল্লাহ! আপনি প্রসন্ন কৃপায় আমার সৃজন সাধন করলেন তবে আমায় বলুন, আমার প্রার্থনা, এই কথাগুলির তাৎপর্য কী যে—‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাছুল’, তবে কি আমার আগে আর কোনো মানবের জন্ম হয়েছে? আল্লাহ ইরশাদ করলেন, ‘খোশ আমদেদ তোমায় হে আমার দাস আদম, তোমায় বলছি যে তুমিই প্রথম মানব যা সৃষ্টি আমি করলাম। আর যার নাম তুমি দৃশ্যমান দেখলে সে তোমার সন্তান, যার আবির্ভাব হবে মর্তলোকে এখন থেকে বহুযুগ পর আমার রাসূলরূপে। যাঁর উপলক্ষে এই জগৎ-সৃষ্টি, তাঁর আগমন জগতকে আলোকিত করবে, তাঁর আত্মাকে ঐশী গরিমায় সংরক্ষিত রাখা হয়েছে প্রথম সৃষ্টির উষালগ্ন হতে ষাট হাজার বছর পূর্বে।’

আদম আরয করলেন, ‘মাবুদ! আমার হাতের নখে এই লিপি খচিত হওয়ার বর দান করুন।’ আল্লাহ তখন মানবের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠে সেই লিপি দান করলেন, ডান হাতের নখাগ্রে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ আর বাম হাতের নখাগ্রে ‘মুহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ।’ তখন পিতৃসুলভ বাৎসল্যে প্রথম মানব এই কথাগুলি চুম্বন দান করলেন এবং দুই চোখের ওপর ঘষে উচ্চারন করলেন, ‘ধন্য সেই দিন যে দিন তোমার আবির্ভাব হবে মর্তলোকে।
আমি রেফারেন্স ছাড়া বললে হয়তো বিশ্বাস হবে না কারণ আরো পাচ জনের মুখে শুনা কথার মতই লাগবে এবং বিশ্বাস অবিশ্বাসে দোলায় ঈমান নষ্ট হবে। সে জন্যই কিতাবটি থেকেই উল্লেখ করেছি। যেহেতু সৃষ্টির গৌড়া থেকেই আদমের ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলীর উপর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আর বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুরীর মুহাম্মাদুর রাছুলুল্লাহ লেখা আছে দুই আঙ্গুল দুইটি একসাথ করলে পূর্ণ কলেমা হয়। সেহেতু আমরা জেনে বুজে কলেমায় চুমো দিয়ে চোখে লাগালেই তার পূর্ণ সোয়ব আল্লাহ দিবেন ইনশাআল্লাহ। নচেত কিছুই মিলবে না।



মন্তব্য চালু নেই