বুদ্ধিজীবী দিবসে বধ্যভূমি দখল মুক্ত করতে বেরোবি ভিসির আশ্বাস
এইচ. এম নূর আলম, বেরোবি প্রতিনিধি : স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও অরক্ষিত, অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকা রংপুরের দমদমা বধ্যভূমি দখল মুক্ত রাখতে এবং সীমানা নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনে আইনি সহায়তা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি)বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে এম নূর-উন-নবী। সাথে সাথে আগামী বুদ্ধিজীবী দিবসের আগেই বদ্ধভূমির যতটুকু উন্নয়ন করা সম্ভব ততটুকু করে এর তাৎপর্য রক্ষার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন উপাচার্য।জমির সীমানা নির্ধারণ করে অন্তত একটি দেয়াল নির্মাণের আশ্বাস দেন তিনি।
বুধবার বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে দমদমায় পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এসব আশ্বাস দেন উপাচার্য ড. এ কে এম নূর-উন-নবী।এ সময় উপস্থিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি,সাংবাদিক সমিতি,কর্মকর্তাদের সংগঠন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারি ইউনিয়ন।
এছাড়াও পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ (শিক্ষক),বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য সংগঠন।
বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেয়ার ৬ বছরেও কার্যত কোনো উদ্যোগ গ্রহন না করায় বিলীন আর দখল যজ্ঞে আজ অস্তিত্ব সংকটে দেশের অন্যতম এই বধ্যভূমি। এ পর্যন্ত সীমা নির্ধারণ না করায় বেসরকারি একটি কোম্পানি আর স্থানীয় ভূমিখেকোদের থাবায় বিলীন হতে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ঐতিহাসিক এই স্থানটি।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের দমদমা ব্রিজের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কারমাইকেল কলেজের ৪ শিক্ষককে রাতের অন্ধকারে ক্যাম্পাস থেকে ধরে এনে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই বেদনাবিধূর কাহিনীর রেশ কাটতে না কাটতেই ৭ জুন আবার এই স্থানে ঘটে আরেক লোমহর্ষক ঘটনা। ওই দিন রাতের স্তব্ধতাকে কাটিয়ে গভীর রাতে একে একে তিন ট্রাক বোঝাইকৃত শত শত সাধারণ মানুষকে এনে আবারো এই দমদমা নামক স্থানে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার দীর্ঘদিন অরক্ষিত থাকার পর ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর কারমাইকেল কলেজ শিক্ষক পরিষদ মহাসড়কের পাশে একটি স্মৃতিফলক ও মূল স্থানে একটি ছোট স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন। অবশেষে ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তবে গত কয়েকে বছর আগে বধ্যভূমির নামসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একটি সাইনবোর্ড টাঙানো থাকলেও এখন উধাও হয়ে গেছে সেই সাইনবোর্ড। ক্রমান্বয়ে বিলীন হতে বসেছে বধ্যভূমিটি।
এ ব্যাপারে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নূর-উন-নবী বলেন, সম্প্রতি সীমা নিধারণের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ কিভাবে নেয়া যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সীমা নির্ধারণ করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রয়োজনে আইনি সহযোগিতা নেয়া হবে। এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই