বিয়ে করতে না চেয়ে বাড়ি থেকে পালানো কিশোরী এখন শিল্পপতি

শুধু কিশোররা নয়। বাড়ি থেকে পালিয়ে উপকৃত হয় কিশোরীরাও।
এরকমই একজন হলেন চন্দা জাভেরি ভুওয়ালকা। নিজের পায়ে না দাঁড়িয়ে বিয়ে করতে রাজি হননি তিনি। কিন্তু মাড়ওয়ারি সমাজের রীতি মেনে তার ১৭ বছর বয়সেই বিয়ের সম্বন্ধ ঠিক করেন বাবা-মা। সেই ১৯৮৪ সালে।
কিন্তু তখন বিয়ে করতে রাজি হলেন না সপ্তদশী চন্দা। সম্পূর্ণ গোপনে যোগাযোগ করলেন বোস্টনে থাকা এক পরিচিত পরিবারের সঙ্গে। নিজের হিরের আংটি বিক্রি করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের টিকিট কিনলেন। তারপর একদিন সুযোগ বুঝে কলকাতা থেকে পালালেন আমেরিকা। প্রাথমিক ভাবে থাকার জায়গা দিলেন বস্টন-এর ওই দম্পতি।
কিন্তু তাঁদের ভরসাতেই বসে থাকলেন না চন্দা। খুঁজে নিলেন রাতের বেলা এক বৃদ্ধাকে দেখাশোনা করার কাজ। কিন্তু চাকরির প্রথমদিনই মারা গেলেন বৃদ্ধা।
এতে দমে গেলেন না চন্দা। পেয়ে গেলেন আর এক বৃদ্ধাকে দেখাশোনা করার কাজ। এইভাবে চলল তাঁর রাতে চাকরি। দিনের বেলা শুরু করলেন পড়াশোনা। বিষয় বাছলেন মলিকিউলার বায়োলজিকে। ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে গবেষণা চালালেন নোবেলজয়ী লিনাস পওলিং-এর তত্ত্বাবধানে।
আজ, চন্দা রূপচর্চার এবং প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি করেন। ব্যবসায় সফল হয়ে তিনি একজন কোটিপতি। কিন্তু জীবনে সব কিছুই এত সহজে হয়নি। এর মাঝে তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে লিউকেমিয়ার মতো অসুখের বিপক্ষে। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী ছিলেন। কিন্তু অদম্য মনোবলের কাছে হার মানতে হয়েছে লিউকেমিয়ার মতো অসুখকেও।
এত ঝড় ঝাপ্টার মধ্যেও বাড়ির সঙ্গে চন্দার যোগাযোগ ছিন্ন হয়নি। আমেরিকায় পৌঁছনোর চার বছর বাদে বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন চন্দা। বাবা-মা জীবিত থাকা অবধি অটুট ছিল সেই যোগাযোগ। চন্দার ভাইরাও যেতেন তাঁর কাছে।
কলকাতা ছেড়ে গেলেও কলকাতাকে ভুলতে পারেননি চন্দা। এখন চান এই শহর থেকেও ব্যবসা করতে। একদিন কপর্দক হীন অবস্থায় যে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন আজ সেই শহরেই শিকড়ের টান খুঁজতে চান তিনি। কারণ কলকাতা ছেড়ে চলে গেলেও এই শহর যে তার ভূমিসন্তানদের ছাড়তে চায় না। তিনি যেখানেই যান না কেন‚ কলকাতা তাঁর সঙ্গেই ছিল। এটাই মাহাত্ম্য কল্লোলিনী তিলোত্তমার।
– ইন্টারনেট
মন্তব্য চালু নেই