পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা
বিশ্ব ইজতেমায় নজরদারিতে পাকিস্তানসহ ১০ দেশের নাগরিক
![](https://archive1.ournewsbd.net/wp-content/uploads/2016/01/2016_01_08_11_45_56_2yESDglMgVVaylPjgUCVCrh6nIbBGZ_original.jpg)
বিশ্ব ইজতেমায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা মোকাবেলায় কঠোর নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, বিদেশি জঙ্গিরা যেন দেশে ঢুকতে না পারে সে জন্য ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
পাকিস্তানসহ বিশ্বের ১০টি মুসলিম দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে অন অ্যারাইভাল ভিসা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইজতেমার পরও এসব দেশের নাগরিক বিমানবন্দরে অন অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন না। তবে তারা তাদের দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে ভিসা নিয়ে এলে বিমানবন্দর পেরিয়ে ইজতেমায় প্রবেশ করতে পারবেন।
পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, এবার পাঁচ স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হচ্ছে তুরাগের ইজতেমা ময়দানকে। পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রায় ১৫ হাজার সদস্য এই নিরাপত্তা দিচ্ছে।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুক্রবার শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দলে দলে মাঠে আসতে শুরু করেছে দেশি-বিদেশি মুসল্লিরা। কয়েক হাজার বিদেশি মুসল্লি এসেছেন। তাদের বেশিরভাগই ভারত ও মধ্য প্রাচ্যের।
সূত্র জানায়, এবারের ইজতেমায় ১০ থেকে ১২ হাজার মুসল্লি যোগ দেয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে ভিসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, মধ্য প্রাচ্যর মুসল্লিই বেশি। পাকিস্তানের মুসল্লিদের আসতে হলে পাকিস্তানে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে ভিসা নিয়ে আসতে হবে। বিমানবন্দরে তাদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়া হবে না। শুধু পাকিস্তানই নয়, আফগানিস্তান, সিরিয়া, নাইজেরিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো, সুদানসহ ১০টি মুসলিম দেশ এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। এসব দেশে জঙ্গি তৎপরতা থাকায় অন অ্যারাইভাল ভিসা নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
সূত্র মতে, কোনো বিদেশির ইজতেমায় আসার ক্ষেত্রে সেই দেশে থাকা বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে টিআই (তাবালিগ ইজতেমা) ভিসা নিয়ে আসার নিয়ম করা হয়েছে। যেসব মুসল্লি ইজতেমায় যোগ দেয়ার জন্য আসতে চান তারা সেই দেশের মারকাজের সুপারিশ নিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করলে তাকে ভিসা দেয়া হয়। তা না হলে ভিসা দেয়া হয় না।
বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র জানায়, গত ক’দিন ধরেই বিদেশিরা আসতে শুরু করেছেন। গত তিনদিনে সবচেয়ে বেশি বিদেশি এসেছেন। ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করা না শর্তে বলেন, ‘যেহেতু জঙ্গির বিষয় আছে সে কারণে বিমানবন্দর দিয়ে যেসব মুলল্লি প্রবেশ করছেন তাদের ডাটাবেজ চেক করে সন্তুষ্ট হওয়ার পরই ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।’
শুক্রবার ফজরের নামাজের পর থেকে টঙ্গীতে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথমপর্ব। আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষ হবে। এরপর ১৫ জানুয়ারি দ্বিতীয়পর্ব শুরু হবে। ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয়পর্বের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে দুইপর্বের বিশ্ব ইজতেমা। আর সে কারণে ইজতেমায় পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘১৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা দিচ্ছে এবারের ইজতেমায়। মাঠের প্রবেশ মুখে সার্চ টাওয়ার বসিয়ে সিসি টিভির মাধ্যমের পুরো মাঠ মনিটরিং করছে পুলিশ। বিদেশিদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
র্যাবের সহকারী পরিচালক মেজর মাকসুদ আলম জানান, হেলিক্টার দিয়ে পর্যবেক্ষণসহ নানা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে র্যাব। সাদা পোশাকে থাকছে গোয়েন্দা নজরদারি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ইজতেমা মাঠে যাচ্ছেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান।
মন্তব্য চালু নেই