বিরোধী দমনে সরকারের নিন্দা
বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রতিহত করতে সরকারি পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআর ডব্লিউ)। একই সঙ্গে গণমাধ্যমের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করবে বলে সতর্ক করেছে তারা।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ মত প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক এ মানবাধিকার সংস্থা।
বিজ্ঞপ্তিতে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের নীতি পরিহার, বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং গণমাধ্যমের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংস্থার এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডমস বলেছেন, ‘সরকারের নির্বিচার ক্ষমতা প্রয়োগ, গ্রেপ্তার এবং নিয়ন্ত্রণ আরোপ বিদ্যমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে আরো উত্তপ্ত করবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তা বিধানে সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় না এবং আইনের শাসন উপেক্ষিত হয় না এমন উপায়েই তা করা উচিৎ।’
উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর পূর্তিতে দেশ আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গণতন্ত্র হত্যা দিবস আর গণতন্ত্রের বিজয় দিবস এই দুই বিপরীত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি আর আওয়ামী লীগ।
সরকারি দল বিরোধী দলের কর্মসূচি প্রতিহত করতে নির্বিচারে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কার্যত অবরুদ্ধ। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কারাগারে। মুখপাত্র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রজিভী আহমেদ আত্মগোপনে থেকে ভিডিওবার্তায় গণমাধ্যমে বার্তা পাঠাচ্ছেন।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী দলীয় কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে সভাসমাবেশ করেছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশ থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের চাপে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার পরই মির্জা ফখরুলকে আটকেরও নিন্দা জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক এ মানবাধিকার সংস্থা।
একুশে টিভির চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তারা বলেছে, বিরোধীদের প্রতি সমবেদনা দেখালে সেসব গণমাধ্যম সরকারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য অতিমাত্রায় প্রচার করার অপরাধে গত ৭ জানুয়ারি আব্দুস সালামকে আটকের পর একটি পর্নোগ্রাফির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এইচআরডব্লিউ আরো বলেছে, তারেকের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পরপরই সরকার তার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কোনো কারণ উল্লেখ করা ছাড়াই।
অ্যাডামস বলেছেন, ‘ওই টিভি স্টেশন বন্ধ করে দেয়া এবং মালিককে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি এই সরকারের কাছে থেকে কাম্য নয় যারা নিজেদের গণতান্ত্রিক বলে দাবি করে।’
মন্তব্য চালু নেই