বিমানের আয় কমেছে ৪৮ কোটি টাকা
জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আয় গত অর্থবছরের তুলনায় ৪৮ কোটি টাকা কমেছে। যদিও এই অর্থবছরে বিমানের যাত্রী পরিবহন বেড়েছে।
বিমানের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বিমান লাভ করেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিমান ৩২৪ কোটি টাকা লাভ করে। গত অর্থবছরে লাভ ৪৮ কোটি টাকা কমে ২৭৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
অবশ্য ২০০৭ সালে বিমান কোম্পানিতে রূপান্তর হওয়ার পর ২০০৭ ও ২০০৮ সালে পরপর দুবার লাভের মুখ দেখে। এরপর আবার লোকসানে পড়ে জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটি। টানা ৫ বছর লোকসানে থাকার পর সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিমান লাভের মুখ দেখে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে লাভে থাকলেও এর পরিমাণ কমে আসে। পরপর দুই অর্থবছরে বিমান লাভ করেছে ৬০০ কোটি টাকা। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বিমান রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৩১০ কোটি টাকা রাজস্ব কর দিয়েছে। ।
২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বিমান যাত্রী বহন করেছে ২৩ লাখ ১৮ হাজার জন, এর আগের বছর যা ছিল ২০ লাখ ২০ হাজার। অবশ্য কার্গো পরিবহন খাতে বিমান ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৪০ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন মালামাল পরিবহন করেছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৭ শতাংশ কম।
আয় কমার কারণ হিসেবে বিমান বলছে, ২০১৬ সালের ৮ মার্চ যুক্তরাজ্য সরকার কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারণে কার্গো পরিবহন তুলনামূলক কিছুটা কম হয়েছে। ফলে আয়ও কমেছে। এ ছাড়া বিশ্ব বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে অ্যাভিয়েশন জেট ফুয়েলের তুলনামূলক বেশি দাম হওয়ায় খরচ বেশি হয়েছে। তবে সংস্থাটি বলছে, এত কিছুর পর বিমানের এই মুনাফা অর্জন নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য সফলতা। তা ছাড়া বিমানের যাত্রী সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এটা বিমানের ওপর আস্থারই প্রতিফলন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বিমান হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার নিজস্ব ফ্লাইট ছাড়াও ২৬টি বৈদেশিক এয়ারলাইনসের ১৮ হাজার ৬২৮টি ফ্লাইট হ্যান্ডেলিং করেছে। বর্তমানে বিমান বহরে রয়েছে বোয়িংয়ের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির চারটি ব্র্যান্ড নিউ বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর ও দুটি ব্র্যান্ড নিউ বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট।
এ ছাড়া বহরে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি লিজে সংগ্রহ করা দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ এবং দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের জন্য দুটি ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট। বিমান বহরের উড়োজাহাজগুলো বয়সের দিক দিয়ে আধুনিক। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিমান বহরে যুক্ত হচ্ছে বিশ্বের সর্বাধুনিক ব্র্যান্ড নিউ চারটি বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭। ইতিমধ্যে বিমান বোয়িং সংগ্রহ করা ছয়টি এয়ারক্রাফটের ক্রয় আদেশের বিপরীতে বিমান নিজস্ব অর্জিত আয় হতে ১২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কানাডার এয়ারক্রাফট ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠান বোম্বারডিয়ার হতে তিনটি ব্র্যান্ড নিউ ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ উড়োজাহাজ কেনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন, যা ‘জিটুজি’ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হবে। বর্তমানে বিমান ১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে এবং সাতটি অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচল করছে।
মন্তব্য চালু নেই