বিজয়ের আনন্দে সেজেছে ঢাকা
১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির দিন। বাঙালির সবচেয়ে আনন্দের দিন। ১৯৭১ সালে এদিন দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করে বিশ্বের মানচিত্রে সৃষ্টি হয় নতুন একটি সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশ। আর বিজয়ের এ দিনটিকে স্মরণ করে রাখতে রাজধানী ঢাকাকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। আলোকসজ্জায় রঙিন ঢাকা যেন পরিণত হয়েছে একখণ্ড লাল সবুজের পতাকায়।
বিজয়ের ৪৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে ইতোমধ্যেই নতুন সাজে সেজেছে রাজধানী ঢাকাকে। বাহারি আলোকরশ্মি। লাল, নীল, হলুদ, সাদা, সোনালি, হরেক রঙের মরিচবাতি। আলোকসজ্জার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধুসহ মুক্তিযোদ্ধের বিভিন্ন প্রতীকী ও জাতীয় পতাকার আদলে এমন মোহনীয় সাজে সেজেছে রাজধানী ঢাকা। মনকড়া এমন আলোকসজ্জায় মুগ্ধ সবাই।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, স্থাপনা, অফিস-আদালত সেজেছে বর্ণিল সাজে। সন্ধ্যার পরই লাল সবুজের আলোতে ঝলমলিয়ে ওঠে পুরো রাজধানী। চোখ ধাঁধানো এ আলোকসজ্জার ঝলকানিতে মন কেড়েছে সবার।
রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, পল্টন, দৈনিক বাংলা, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকায় গুরুত্বপূর্ন ভবনগুলো আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বিভিন্ন রঙ ও বর্ণের এসব আলোকসজ্জা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। মনকাড়া এমন আলোকসজ্জায় মুগ্ধ অনেকেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ভবনে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা করা হয়েছে। ভবনে বাতির ঝলমলে ফুটে উঠেছে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা, সামনে স্মৃতিসৌধ, এর এক পাশে অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধারা অন্য পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীকী ছবি।
এছাড়াও মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায় সোনালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, জীবন বীমা ভবনসহ বড় বড় স্থাপনা সাজানো হয়েছে।
রাজধানীর এ আলোকসজ্জা দেখে মুগ্ধ কর্মব্যস্ত মানুষ। অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন আবার অনেকে সুন্দর এ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছেন।
মতিঝিল শাপলা চত্বরের সামনে আলোকসজ্জা দেখছেন ব্যাংকার হারুনুর রশিদ। তিনি বলেন, আমাদের মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে রাজধানীকে যে আলোকসজ্জা করা হয়েছে তা আসলে মনোমুগ্ধকর।
প্রতিদিনই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। আলোকসজ্জার কারণে যে দৃশ্যপট সৃষ্টি হয়েছে তা আসলেই চোখ ধাঁধানো। যে কারণে দৃশ্যটি মোবাইলে ধারণ করলাম।
কলেজ শিক্ষার্থী তন্ময় আহমেদ জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে সাজানো এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য নিজ চোখে না দেখলে কেউ উপভোগ করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ভূমিষ্ঠ হয়। পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাসে মরণপণ লড়াই করে বাংলার দামাল সন্তানরা বিজয় লাভ করে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লাল সূর্য। বাংলাদেশের এ যুদ্ধ ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জন্য যুদ্ধ, পরাধীনতার বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ, মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য যুদ্ধ। মাতৃভূমির কপালে বিজয়ের লাল টিপ পরাতে লাখো শহীদ তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, হাজারও মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি বীর শহীদের, যারা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে আমাদের জন্য এনে দিয়েছে স্বাধীনতা।
মন্তব্য চালু নেই