বিচারকদের শৃংখলাবিধি : ১৫ জানুয়ারির মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ
অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃংখলা-সংক্রান্ত পৃথক বিধিমালার গেজেট আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশ করে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের আট বিচারপতির বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
এর আগে আদালতের তলবে সকালে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ শাখার সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক দুলাল এবং লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং বিভাগ শাখার সচিব শহিদুল হক হাজির হয়ে গেজেট না হওয়ার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃংখলা-সংক্রান্ত পৃথক বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার তাদের তলব করেছিলেন আপিল বিভাগ।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্য সুপ্রিমকোর্ট প্রস্তাবিত আলাদা আচরণ ও শৃংখলাবিধির খসড়া গেজেটে প্রকাশ করার দরকার নেই। রোববার আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ মর্মে জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত সুপ্রিমকোর্টে পাঠানো হয়েছে। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ জারি করা পরিপত্রে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই উল্লেখ নেই।
এ বিষয়ে আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে ভুল বুঝানো হয়েছে। আমরা নতুন কোনো শৃংখলাবিধি করে দেইনি। আপনাদের করা বিধি সংশোধনের কথা বলেছি।’
সরকারপক্ষের দ্বিতীয় দফা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃংখলা সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন।
ওইদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী আইন পর্যালোচনা করেন না। আইন পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয়ের ড্রাফটিং বিভাগ। কেন আপনারা আবারও সময় চাচ্ছেন। গত সপ্তাহে বলেছিলেন, গেজেট প্রকাশ করতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে।’
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর শৃংখলা বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনাসহ রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের ৭ম দফায় অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃংখলা বিধানের জন্য আলাদা শৃংখলাবিধি প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু সেটি আজও প্রণয়ন হয়নি।
এ অবস্থায় আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃংখলাবিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়।
চলতি বছরের ২৮ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানিকালে আপিল বিভাগ বলেন, একটি খসড়া ডিসিপ্লিনারি রুলস তারা (সরকার) দাখিল করেছে। এটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ, যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থি। এখন আমরা কমিটি করে একটি রুলস তৈরি করে দিয়েছি। এটির আলোকে শৃংখলাবিধি তৈরি করে ৬ নভেম্বর আপিল বিভাগকে জানাতে সরকারের প্রতি নির্দেশনা ছিল।
কিন্তু ওই শৃংখলাবিধির গেজেট জারি না হওয়ায় ৭ নভেম্বর আপিল বিভাগ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর ২৪ নভেম্বরের মধ্যে এ বিধি তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
মন্তব্য চালু নেই