বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ের সামনে ‘প্রতীকী লাশ’ নিয়ে সাংসদের প্রতিবাদ

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশে ‘প্রতীকী লাশ’ নিয়ে দেশব্যাপী সৃষ্ট নাশকতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম এ লতিফ। এ সময় তার সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে চারটি ট্রাকে করে অর্ধশতাধিক লোক নিয়ে কার্যালয়ের পাশে ৮৬ নম্বর রোডের প্রবেশমুখে আসেন এম এ লতিফ। একটি ট্রাকে ১৪টি ‘প্রতীকী লাশ’ এবং অন্য ট্রাকে নাশকতায় প্রতীকী আহতাবস্থায় আটজন ছিলেন। অন্য দুটি ট্রাকে প্রতিবাদী লোকজন ছিলেন। তারা হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে স্লোগান দেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আনা বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ডে নাশকতাবিরোধী নানা লেখা শোভা পায়। ‘লাইফ ফাস্ট, ডেমোক্রেসি নেক্সট’, ‘স্টপ ওয়ার অ্যাগেইনস্ট সিভিলিয়ান’, পোড়া মাটি নীতি কেন খালেদা জিয়া জবাব চাই’, ‘পেট্রোল বোমা বন্ধ করো’, ‘বোমা না কলম, কলম, কলম’ প্রভৃতি প্রতিবাদী লেখা দেখা যায়। বিক্ষোভকারীরা ট্রাক নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে আসতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে ওই রোডের প্রবেশমুখেই কিছুক্ষণ অবস্থান করে চলে যান।

এর আগে এম এ লতিফ খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে তিনি কীভাবে নাশকতা করে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা প্রত্যক্ষ করছেন। সাধারণ মানুষকে কেন পেট্রোল বোমা মেরে মারছেন। হরতাল জনগণের ওপর হায়েনাদের লেলিয়ে দিয়ে তিনি ঘরে বসে থাকছেন।’

‘গণহত্যা’ থেকে সরে আসতে খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে নাশকতা করে আপনি তামাশা দেখছেন। আপনিও তো একজন মা। কিছুদিন আগে নিজের ছেলে মারা গেছেন। পেট্রোল বোমা মেরে আরেক মায়ের কোল খালি করার আহাজারি কীভাবে সহ্য করবেন?’

ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, ‘উনি যদি গণতান্ত্রিক দলের নেত্রী হয়ে থাকেন, তাহলে মানবিক দিক দিয়ে হলেও গণহত্যা থেকে সরে আসবেন। উনি ক্ষমতায় ছিলেন, জনগণ চাইলে আবারও ক্ষমতায় আসবেন।’ সে জন্য জনগণ, দেশ ও অর্থনীতিবান্ধব কর্মসূচি দিতে বিএনপিপ্রধানের প্রতি আহ্বান জানান এম এ লতিফ।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির ঠিক দুদিন আগে ৩ জানুয়ারি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ৫ জানুয়ারি কার্যালয় থেকে বের হতে চাইলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধায় তা পারেননি। পরে কার্যালয়ের ভেতর থেকেই অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেন তিনি। অবরোধের পাশাপাশি একাধিকবার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি।

 

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের এই সরকারবিরোধী আন্দোলনে দেশব্যাপী নাশকতায়, বিশেষ করে পেট্রোল বোমায় হতাহত হয়েছেন অনেকে। হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের দাবিতে বিএনপিপ্রধানের কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ করেছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।



মন্তব্য চালু নেই