বিএনপির দুর্বলতায় আগ্রাসী সরকার

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘বিএনপির দুর্বলতা এই সরকারকে আরও বেশি আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছে। তাই এই সঙ্কট নিরসনে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।’

‘গুম হওয়া সকল পরিবারকে জাতীয় শহীদ মিনারে একত্রিত হওয়ার আহ্বান’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জীবন ও মৃত্যুর প্রশ্ন যেখানে সেখানে দল বড় হতে পারে না। গুম হওয়া পরিবারের কান্না মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলার মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। তবেই বাংলার মানুষ এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসবে এবং জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠবে।’

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে স্বাধীনতা প্রজন্ম বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সংসদ আয়োজিত ‘গুম রাজ্যে প্রত্যাবর্তন-গণতন্ত্রের শবযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর সমালোচনা করে মান্না বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের তস্কর সংসদের দাস বানিয়ে ফেলা হয়েছে। আর গুম-খুনের মাধ্যমে এ দেশকে বানানো হয়েছে মৃত্যু উপত্যকা।’

প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই দুই দল একে অপরকে ধ্বংস করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের কাছে মুক্তির কোনো পথ দেখছি না। এ দুই দল যদি ভালো হত তাহলে মান্না-কামাল হোসেনদের দরকার পড়তো না।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘গুম-খুনের রাজনীতির যারা উদ্যোক্তা তারা আমাদের কাছে দৃশ্যমান। এ সরকার তাদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতেই বিরোধী চিন্তাকে গুম করার ঘটনা ঘটাচ্ছে। বর্তমান গুম-খুন কোনো রাজনীতির বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা প্রতিরোধ করতে দরকার জাতীয় ঐক্য। আর বিএনপিকেই এই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে এবং অন্যান্য দল ও জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন এ সরকার আইন করছে বেআইনী সংসদে বসে। সরকার ইতোমধ্যে কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী শাসকে পরিণত হয়েছে। তারা রাজনীতিকদের ওপর নির্যাতনের মাধ্যমে হুঁশিয়ার করছে যারা সরকারের এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাদেরকেই গুম-খুন পরিস্থিতির শিকার হতে হবে।’

গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি নিজেদের মধ্যে গণতন্ত্রায়ন না করলে আন্দোলন বেগবান হবে না।’

জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, ‘স্বাধীন দেশে আমার মানুষেরা গুম হয়ে যাচ্ছে এটা মেনে নেয়া যায় না। স্বাধীনতা শব্দটা আজ গালভরা বুলিতে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রের স্বপ্ন এখানে সোনার পাথর বাটি।’

ভারতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকশিত হলে ভারত খণ্ড-বিখণ্ড হতে পারে। তাই তারা কখনোই চায় না বাংলাদেশ সত্যিকারের একটি স্বাধীন দেশে পরিণত হোক।’

শফিউল বলেন, ‘ভারতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা নীতির প্রশ্নে সবাই এক। তাদের সরকার পরিবর্তন হলেও নীতির পরিবর্তন হয় না। তাই সীমান্তে প্রতিদিন বাংলার মানুষ বিএসএফের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, পানির ন্যায্য হিস্যা আমরা এখনও পাই না।

সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী এসএম সাইমন কামালীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া, গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমনের বড় বোন মারুফা ইসলাম ফেরদৌসি, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়া প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই