বায়োমেট্রিক নিবন্ধনে সবচেয়ে পিছিয়ে টেলিটক

সরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের ৪২ লাখের বেশি সিম থাকলেও এ পর্যন্ত বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ায় পুনঃনিবন্ধন করেছে মাত্র ৮ লাখ গ্রাহক। নিবন্ধনের দিক থেকেও প্রায় সবার শেষের দিকে রয়েছে অপারেটরটি।

এছাড়া মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক, টেলিকম অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবসহ সংশ্লিষ্টরা এ সংক্রান্ত সময় বৃদ্ধির বিষয়ে আবেদন করেছেন। এখনো ৩৪ লাখ সিম অনিবন্ধিত থাকলেও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা টেলিটক রয়েছে নীরব দর্শকের ভূমিকায়।

এ বিষয়ে টেলিটকের কোনো কর্মকর্তার মুখ খোলা যায়নি। তবে পরিচালক পদমর্যাদার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, টেলিটকের অনেক সীমাবদ্ধতা। সব বিষয়ে বিটিআরসি ও মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়।

বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৪১ শতাংশ অর্থাৎ ২ কোটির ৩২ লক্ষ গ্রাহক বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে তাদের সিম পুনরায় নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। আঙুলের ছাপে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই প্রতিমাসে ১০ লাখ করে কমছে সক্রিয় থাকা মোবাইল ফোন গ্রাহক।

গত তিন মাসেই ২৮ লাখ সক্রিয় সিম কমে গেছে। মাঝে কিছুটা ভাটা পড়লেও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে আদালত বৈধ ঘোষণার পর নিবন্ধন করতে গ্রাহকের আগ্রহ এখন আবার বেড়েছে।

এদিকে সিম নিবন্ধনে সময় বৃদ্ধির ব্যাপারে দু’দফা ইঙ্গিত দিয়েছেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। সিম নিবন্ধনের শেষ দিনের আগের দিন শুক্রবার সাংবাদিকদের কাছে এ কার্যক্রমের সময় বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণের সমস্যা, সুবিধা-অসুবিধার প্রতিও আমরা সবসময় শ্রদ্ধাশীল। শনিবার আপনাদের জানিয়ে দেব, আমি আরেকটু বুঝি।’

এর আগের দিন বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিম নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়াতে অপারেটরদের আবেদনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো জনগণ কী চায়। জনগণ যদি মনে করে আরো সময়ের প্রয়োজন, তাহলে সরকার সেটি অবশ্যই বিবেচনা করে দেখবে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ ৩০ এপ্রিল জানানো হবে।’

এদিকে, পুনঃনিবন্ধনের শেষ সময়ে চাপ পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। অপারেটররা দাবি করছে, অতিরিক্ত চাপে এনআইডি (জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ) সার্ভার ডাউন হওয়ার কারণে ঠিকমতো রিপ্লাই আসছে না।

উল্লেখ্য, গত ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট এ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনকে বৈধ বলে রায় দেন। তবে মোবাইল ফোন অপারেটরসহ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষে ৩ থেকে ৪ কোটি সিম অনিবন্ধিত থাকবে এবং সরকার বন্ধ করে দিলে এই বিপুল পরিমাণ গ্রাহক কমে যাবে।

বিটিআরসির তথ্য অনুসারে, গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংযোগ ছিল ১৩ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার। ৩১ জানুয়ারিতে তা কমে ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজারে দাঁড়ায়। ফেব্রুয়ারির শেষে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ১০ লাখ ৮৫ হাজারে। মার্চের শেষ নাগাদ আরো দুই লাখ চার হাজার কমে ১৩ কোটি আট লাখ ৮১ হাজারে দাঁড়ায়। গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সংযোগ কমেছে ২৮ লাখ ৩৯ হাজার।



মন্তব্য চালু নেই