বাল্যবিবাহ আইনে বিশেষ বিধান ‘বাস্তবসম্মত’
মেয়েদের ১৮ বছর বয়সের আগে আদালতে অনুমতি নিয়ে বিয়ের বিষয় সংবলিত বাল্যবিবাহ আইন অত্যন্ত ‘বাস্তবসম্মত’ একটা চিন্তা বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাল্যবিবাহ আইন নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিতে হবে।’
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাল্যবিবাহ আইনে সংযুক্ত ওই বিধানের যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, অত্যন্ত ‘বাস্তবসম্মত’ একটা চিন্তা এটি। যেটা সম্পর্কে ইনাদের কোনো ধারণা নেই। ঢাকা শহরে বাস করে গ্রামের অবস্থা জানা যায় না। গ্রামে যার একটা উঠতি বয়সী মেয়ে আছে সে জানে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কোনো দিন গ্রামে বাস করেনি, গ্রামের সমাজ সম্পর্কে জানে না। শুধু একবার গেলাম আর দেখলাম, কথা বললাম-এটা সমাজ জানা হয় না। দিনের পর দিন গ্রামে বসবাস করলে গ্রামের বাস্তব অবস্থা, গ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উপলব্ধি করা যায়, জানা যায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সব কিছু বিবেচনা করেই বাল্যবিবাহ আইনটা করেছি। বাস্তবতাকে সামনে রেখেই করা হয়েছে। কিছু কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এটা নিয়ে অনেক কথা বলছে। যারা কথা বলছেন, তারা একটানা দুই-চার বছর গ্রামে বসবাস করে নাই। এ সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই নাই।’
‘আমাদের দেশে কিছু বিষয় আছে, সে বিষয়গুলো নিয়ে তারা কখনও ভাবে না। যেহেতু বাস্তবতা থেকে তারা অনেক ঊর্ধ্বে। রাজধানীতে বসবাস করে, রাজধানীর পরিবেশ তারা দেখেন। বাস্তব অর্থে গ্রামীণ অবস্থা সম্পর্কে তারা জানে না’-বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক আইনেই যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাহলে সেখানে কি করণীয় তার একটা সুযোগ অবশ্যই দিতে হবে। সেটা যদি না দেয়া হয় তাহলে এই সমাজের জন্য অনেক বড় একটা বিপর্যয় নেমে আসবে। আমরা ১৮ বছর বিয়ের বয়স নির্দিষ্ট করে দিয়েছি। কিন্তু একটা মেয়ে যে কোনো কারণে হোক যদি ১২/১৩ বছর বয়সে পেগনেন্ট হয়ে গেল? যে শিশুটি নেবে সেই শিশুটির অবস্থানটা কোথায় হবে? তাকে সমাজ গ্রহণ করবে? তাকে কি বৈধভাবে নেবে? নেবে না।’
‘এই ধরনের যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে সেখানে বাবা-মা এবং কোর্টের মতামত নিয়ে বিয়ে দিলে মেয়েটা বেঁচে গেল। আর যে বাচ্চাটা হলো সেটা বৈধতা পেল। এই শিশুটি একটা ভবিষ্যৎ পেল’- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্তব্য চালু নেই