বাংলা ছবি দেখেন প্রধানমন্ত্রী, খুশি নির্মাতা-অভিনেতারা
দেশীয় চলচ্চিত্রের ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রথম কোর্সের উদ্বোধনীতে তিনি জানান, উড়োজাহাজে চড়ে কোথাও গেলে বাংলা ছবি দেখে সময় কাটান।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘দেশে এখন মানসম্পন্ন চলচ্চিত্র তৈরি হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশের বাইরে কোথাও লম্বা সফরে গেলে মনোযোগ দিয়ে আমাদের চলচ্চিত্র দেখি। বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে চড়লে ছবি দেখেই সময় কাটে আমার।’
প্রধানমন্ত্রীকে এ মন্তব্য সাধুবাদ জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘চলচ্চিত্রের উন্নয়নে আমরা সবাই কাজ করি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের চলচ্চিত্রকে ভালোবাসেন এবং সময় পেলেই চলচ্চিত্র দেখেন এটা আমার মতো অনেক নির্মাতার জন্য গর্বের বিষয়। জেনে খুবই ভালো লাগলো।’
pm_with_artistsশুধু পুরনো নয়, বিমানে নতুন নতুন ছবি দেখা উপভোগ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বুধবারের অনুষ্ঠানে ফেরদৌস তার প্রযোজিত ও অভিনীত ‘এক কাপ চা’ ছবিটি দেখার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রীকে। এ তথ্য জানিয়ে ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্র দেখার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ আছে জেনে খুব ভালো লাগছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক। জাতীয় পুরস্কার গ্রহণের সময়ও তিনি চলচ্চিত্র দেখার কথা জানিয়েছিলেন আমাকে। আমার ‘এক কাপ চা’ ছবিটি দেখার জন্য তাকে অনুরোধ করেছি। চলচ্চিত্রাঙ্গনের সঙ্গে যদি সরকারের সরাসরি যোগাযোগ না থাকে তাহলে মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। এখন তৃণমূল পর্যায়ে পরিবর্তন দরকার। তাহলে চলচ্চিত্র আরও এগিয়ে যাবে। আমাদের শিল্পীদের অনেক দাবি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে ধারণা দিতে গিয়ে বুঝলাম, তার অনেক কিছুই জানা। তিনি চান, নতুন নতুন সিনেপ্লেক্স নির্মাণ হোক। কেউ সিনেপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিলে কর কমিয়ে দিচ্ছেন বলেও জানান। সব মিলিয়ে এটা আমাদের জন্য সুসংবাদ।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রথম কোর্সের উদ্বোধনী আয়োজনে অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন চিত্রনায়িকা পপি, অভিনয়শিল্পী-নির্মাতা শহীদুল আলম সাচ্চু, নির্মাতা রেদওয়ান রনি প্রমুখ। পপি বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আজ সামনাসামনি কথা হলো। তিনি আমাকে চেনেন। আমার সম্পর্কে প্রশংসাও করলেন। দেশের একজন ক্ষুদ্র শিল্পী হিসেবে এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। তিনি বাংলাদেশের ছবি দেখেন এবং এর উন্নতি চান। এটা আমাদের সবার জন্য বড় পাওয়া। প্রধানমন্ত্রী চাইলে এবং চলচ্চিত্রকে ভালোবাসলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। আমার বিশ্বাস, তিনি চলচ্চিত্রকে আমাদের শিল্পীদের মতো ভালোবাসেন, এজন্যই নিয়মিত ছবি দেখেন।’
নির্মাতা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত চলচ্চিত্র দেখেন, এটা অবশ্যই ভালো দিক। আর আমাদের চলচ্চিত্র নিয়ে প্রশংসাও করেছেন তিনি। আর চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউটের শুরুটা ভালো হয়েছে। এখন এটাকে ঠিকঠাকভাবে পরিচালনা করা এবং যারা কোর্সগুলো ঠিকঠাকভাবে করাবে তাদের অনেক কিছুতে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ প্রযুক্তির পরিবর্তনটা প্রতি মুহূর্তে হচ্ছে চলচ্চিত্রে। তাই সবকিছু সময়োপযোগী করে নিতে পারলে এটা অবশ্যই ভালোর দিকে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’
অভিনয়শিল্পী-নির্মাতা শহীদুল আলম সাচ্চু বলেছেন, ‘ছোটবেলায় ‘অরুণোদয়ের অগ্নিস্বাক্ষী’ ছবিটি দেখার পর বুঝেছিলাম এটা সবার মনে দাগ কেটেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আর রাজাকারদের বর্বরতা কেমন ছিল এবং সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে উঠে এসেছে এতে। এখান থেকেই বোঝা যায় চলচ্চিত্র কতো শক্তিশালী মাধ্যম। প্রধানমন্ত্রী অবসর পান খুব কম। এর মধ্যেও তিনি বিমান ভ্রমণের সময় চলচ্চিত্র দেখেন এই তথ্য চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অনুপ্রাণিত করবে। আমার বিশ্বাস, এ দেশের চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরাও একদিন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় পুরস্কার অর্জন করে আনবে।’
মন্তব্য চালু নেই