বাংলাদেশ ব্যাংকে জনবল সঙ্কট প্রকট

বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশিরভাগ বিভাগেই লোকবল সঙ্কট চলছে। সঙ্কটের মাত্রা প্রকট হওয়ায় অনেককে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও কাজ করতে হয়। এতে তাদের উপর চাপ পড়ে। চাপের কারণে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে সঙ্কট কাটানোর উদ্যোগ নেই দেশের ব্যাংকিং খাত দেখভাল করা এই ব্যাংকটির।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ৮ হাজার ৪০ টি পদের বিপরীতে কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন ৫ হাজার ৫৯২ জন। খালি পদের সংখ্যা ২ হাজার ৪৪৮টি।
এর মধ্যে প্রথম শ্রেণীতে শূণ্য পদের সংখ্যা ৭৬৭, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৬৭৮, তৃতীয় শ্রেণীতে ৭৪৮ এবং চতুর্থ শ্রেনীতে ২৫৫ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকে জনবলের একটি বড় রকমের সঙ্কট রয়েছে। এ জন্য যে সব বিভাগে লোকবল কম তাদের উপর কাজের চাপটাও বেশি পড়ে। তখন বাড়তি কাজ করতে হয়। অধিক চাপের কারণে ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন কর্মকর্তারা। এই অবস্থায় পরিচালনা পর্ষদ বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে।
জনবল সঙ্কটের একটি বড় কারণ উচ্চ শিক্ষার জন্য ছুটি নিয়ে বিদেশ গমন। তাদের অনেকেই লিয়েনে (শর্তসাপেক্ষে ছুটি) থাকেন। সারা বছর এই সংখ্যা প্রায় শয়ে’র কাছাকাছি থাকে। এটাও ঘাটতিতে প্রভাব ফেলে। যারা বিদেশে চলে যান তারা কমই ফেরত আসেন। এলেও বেশিরভাগই অন্য জায়গায় ভালো সুযোগ সুবিধা নিয়ে যোগ দেন। এর জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন না হওয়াকেও দায়ী করেন কর্মকর্তারা।
আবার সঙ্কট নিরসনে এক সঙ্গে বেশি লোকের নিয়োগ নিয়েও জটিলতার সৃষ্টি হয়। কারণ একই ব্যাচে অনেক বেশি নিয়োগ দেয়া হলে তাদের পদোন্নতি নিয়ে জট লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে ক্ষেত্রে পদোন্নতি পেতে দীর্ষ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি পদ খালি রয়েছে সহকারী পরিচালক এবং অফিসার পদে। সহকারী পরিচালকের (এডি) ২ হাজার ৮১ টি পদের বিপরীতে রয়েছেন ১ হাজার ২৭১ জন। এখানে খালি ৮১০ টি পদ। আবার ১ হাজার ১৪ টি অফিসার পদের বিপরীতে রয়েছেন ৩৩৬ জন । এখানে শূন্য ৬৭৮ টি পদ।
মোট ৫ হাজার ৫৯২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যেও আবার পড়াশোনার জন্য ছুটিতে দেশের বাইরে রয়েছেন ৬৭ জন। আর লিয়েনে রয়েছেন ৩১ জন।
এখানে এক্স-ক্যাডারে খালি পদের সংখ্যা ৪৪টি, জেনারেল শাখায় ১ হাজার ৫৫৯ টি, গবেষণা শাখায় ১টি, পরিসংখ্যনে ৩টি, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৮২ ‍টি, কম্পিউটারে ৭৬টি, মেডিকেলে ৯টি এবং ক্যাশ বিভাগে ৬৭৪ টি।
ব্যাংকের কয়েকটি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লোকবলের সঙ্কটে কাজের চাপে অনেককে রাত ৮টা-৯টা পর্যন্তও কাজ করতে হয়। তারপরও তাদের হিমসিম খেতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা ঘাটতি দূর করার জন্য কাজ করছি। এর জন্য প্রতি বছরই নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে ঘাটতি পূরণ হবে বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই