বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণে এমওএম স্বাক্ষর

চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণে মিনিটস অব মিটিং (এমওএম) স্বাক্ষর হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক এবং চীন সরকারের পক্ষে বাংলাদেশস্থ চীনা দূতাবাসের ইকোনোমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ওয়াং জিজিয়ান স্বাক্ষর করেন।

পিরোজপুরের বেকুটিয়া নামক স্থানে এ সেতু নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের সম্ভাব্য অনুদান ১শ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৮শ কোটি টাকা। অবশিষ্ট অর্থের যোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার। ১ হাজার ৪শ ৮০ মিটার বা প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ও সাড়ে ১৩ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণের সঙ্গে নির্মাণ করা হবে প্রায় ১৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক।

এমওএম স্বাক্ষরের পর থেকে ১২ মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়াগত সব কাজ শেষ করে ২০১৬ এর জানুয়ারিতে মূল সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। এবং আগামী তিন বছরের মধ্যে এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এমওএম স্বাক্ষর শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এবং বিশ্বস্ত বন্ধু। দু’দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। বাংলাদেশের অবকাঠামোখাত বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে চীন সরকারের অব্যাহত সহযোগিতা তারই নজির বহন করে।’

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চীনের অংশগ্রহণ এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকাকে করেছে আরো গতিময়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের চলমান কয়েকটি মেগা প্রকল্পে চীনা প্রতিষ্ঠানসমূহ কাজ করছে। আমাদের স্বপ্নের সেতু পদ্মা বহুমুখী সেতু ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প, ঢাকা অ্যালিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেলসহ আরো কয়েকটি প্রকল্পে প্রতিযোগিতামূলকভাবে চীনা প্রতিষ্ঠানসমূহ কাজ করছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমে পিরোজপুরবাসীদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। কচা নদীর দু’তীরের মাঝে তৈরি হতে যাচ্ছে সম্পর্কের সেতুবন্ধ। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দু’টি বিভাগ বরিশাল ও খুলনার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টিকারী ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটি অর্থনৈতিক সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মুক্ত করবে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী আরো বলেন, ‘সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে আজ চীন সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হলো মিনিটস অব মিটিং (এমওএম)। ইতোপূর্বে অক্টোবর ২০১৪-এ দু’দেশের মধ্যে লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় চীনের একটি বিশেষজ্ঞ দল অন-সাইট ইনভেস্টিগেশন করে নভেম্বরে। এর ভিত্তিতে তৈরি করা হবে ফিজিবিলিটি রিপোর্ট। তার পরপরই নকশা প্রণয়ন ও পরামর্শক নিয়োগ করা হবে। পাশাপাশি ডিপিপি প্রণয়ন ও নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে।’

এমওএম স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশস্থ চীন দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স কিউ গুয়ানজো, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি মিজ মেইং রানসহ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই