বাংলাদেশের মর্যাদা ও অস্তিত্বের প্রতীক সুন্দরবন যেন সুন্দর থাকে

মোঃ বদরুজ্জামান, বিশেষ প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা : অনন্য অসাধারণ, নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের অধিকারী আমাদের প্রিয় সুন্দরবন। বাংলাদেশের মর্যাদা আর অস্তিত্বের প্রতিকী সুন্দরবন কেবল সৌন্দর্যের প্রতিক নয় আমাদের এই প্রিয় বন সম্পদে ভরা। বিশ্ব ব্যবস্থায় বাংলাদেশের যতটুকু অর্জন বা বিশ্ব বিভূইয়ে বাংলাদেশ যে মর্যাদার অধিকারী সে ক্ষেত্রে কৃতিত্ব সুন্দরবন। এই বন কেবল সৌন্দর্যের বা সম্পদের লীলাভূমি নয় প্রিয় সুন্দরবন আমাদের অস্তিত্বের, অহংকারের, মর্যাদা আর গর্বের ক্ষেত্র। বহুবিধ প্রাকৃতিক দূর্যোগ দূর্বিপাক হতে সুন্দরবন বাংলাদেশকে রক্ষা করে থাকে। নিকট অতীতের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দূর্বিপাক সিডড় এবং আইলার বিপদ জনক এবং ভয়াবহ হুংকার আর ধ্বংস লীলা হতে দেশকে অনেকাংশে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। সৌন্দর্য্য সম্পদ বা প্রাকৃতিক দূর্যোগ দূর্বিপাক হতে রক্ষার বিষয়টি কেবল যথেষ্ট নয়, আমাদের প্রিয় সুন্দরবন দেশের রাজস্ব উপার্জনের ক্ষেত্র হিসেবে নিজেকে বিলিয়ে রেখেছে। প্রতিদিন সহস্র মানুষ সুন্দরবন অভ্যন্তরে জীবন জীবিকা অর্জনের লক্ষে নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছে। বারবার আলোচিত সুন্দরবন সম্প্রতি আবারও ব্যাপক ভাবে আলোচিত হয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যালা নদীতে তেলবাহী একটি জাহাজ ডুবী এবং উক্ত জাহাজে রক্ষিত তেল শ্যালা নদীতে ছড়িয়ে পড়ার কারণে দেশ বিদেশের মিডিয়ায় সুন্দরবন ব্যাপক ভাবে আলোচিত হতে থাকে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়ায় যে সরকারের মন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্ধত্মন কর্মকর্তারা সুন্দরবন পরিদর্শনে আসে। সঙ্গত কারণে তেল এবং পানি মিশ্রণ হয় না আর নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ার কারণ হেতু উক্ত নদীর পানি দূষিত হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। আর জোয়ার ভাটার প্রভাবে সুন্দরবনের অভ্যন্তর ভাগে দূষিত পানি প্রবাহ এবং দূষিত পানির অস্তিত্ব থাকলে তা জীব বৈচিত্রের জন্য হুমকির কারণ হবে। এমন আশঙ্কা থেকে এবং তৎক্ষণিক কিছু প্রভাবের কারণে সুন্দরবন নিয়ে হৈ চৈ হয় তবে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য এক এবং অভিন্ন তা আমাদের সুন্দরবন যেন সুন্দর থাকে। সুন্দরবনের যেন কোন ক্ষতি না হয়, প্রিয় বনের গাছ গাছালি এবং জীব বৈচিত্র যেন প্রতিদিনের ন্যায় সৌন্দর্য মন্ডিত, সতেজ, সুরক্ষা এবং প্রভাব সম্পর্কে জানতে ইতিমধ্যে সুন্দরবন পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘ ও বৃটিশ বিশেষজ্ঞ দল। দেশবাসির কথা, দেশবাসির ইচ্ছা এবং প্রত্যয় আমাদের অনিন্দ, অসাধারণ বন যেন অনন্য অভাবনীয় সৌন্দর্যের স্পর্শে অটুট থাকে। সুন্দরবনের কোন ধরণের ক্ষতি যেন না হয়। বাংলাদেশের অস্তিত্ব এবং মর্যাদার প্রতিপাদ্য সুন্দরবন কে ঘিরে একশ্রেণীর দেশদ্রোহীদের অপতৎপরতা দীর্ঘদিন যাবৎ চলমান। এসকল দেশদ্রোহীরা জলদস্যু, বনদস্যু নামে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে সুন্দরবন অভ্যন্তরে কর্মরত বনজীবীদের উপর নির্মম নির্যাতন সহ অপহরণ, হত্যা, লুটতরাজ করে আসছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে কর্মরত জেলে, মাওয়াল, বাওয়ালী সহ পর্যটকরা প্রতিনিয়ত এবং প্রতিমূহুর্তে তথাকথিত জলদস্যুও বনদস্যুদের অপতৎপরতার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত্র এবং আতঙ্কিত থাকে। প্রায়ই সময় এ সকল আইন বিরোধী বনদস্যু, জলদস্যুদের হাতে বনজীবিরা অপহৃত হয়। অপহৃতদের আত্মীয় স্বজনদের নিকট হতে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে অপহৃতরা ফিরে আসে এবং কখনও কখনও মুক্তিপনের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে অপহৃতরা নির্মম ভাবে মৃত্যু মুখে পতিত হয়। জলদস্যু এবং বনদস্যুদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সময়োপযোগী এবং পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের পরশমনি গর্ব আর মর্যাদার বরপুত্র প্রিয় সুন্দরবন যেন সদা সর্বদা সুন্দর থাকে। সুন্দর আর সৌন্দর্য্যরে আবরণ হতে যেন কখনও এবং কোন অবস্থাতেই বিচ্যুতি না ঘটে।



মন্তব্য চালু নেই