“বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচন”

বাংলাদেশে এখন যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে তাকে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে সহিংস নির্বাচন বলে বর্ণনা করেছে একটি বেসরকারি সংস্থা।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম ধাপের ভোট গ্রহণ শনিবার শেষ হয়েছে। এই ভোটের সময় বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছে। এর বাইরে বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় অনেকে হতাহত হয়েছেন ।

বেসরকারী একটি সংস্থা সুজন বলছে, এপর্যন্ত এই নির্বাচনে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে এবং তারা এই নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচন হিসেবে উল্লেখ করছে।

“বড় কারণ হলো দলভিত্তিক নির্বাচনের কারণে এটা ঘটছে” বলেন বেসরকারী সংস্থা সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

চতুর্থ ধাপ শেষেই বাংলাদেশে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে হতাহতের দিক থেকে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচন হিসেবে বর্ণনা করেছে সুজন। তাদের হিসেবে পঞ্চম ধাপের আগেই নির্বাচন সংক্রান্ত সহিংসতায় নিহত হয়েছে শতাধিক।

শনিবার পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে তার সাথে যোগ হয়েছে আরো হতাহতের ঘটনা। নির্বাচনের বাকি রয়েছে আরো একটি ধাপ।

মি. মজুমদার বলছেন, সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই তারা হতাহতের সংখ্যা তুলে ধরছেন। তবে নির্বাচনে সহিংসতার পরিমাণ আরো কম বলছে আওয়ামী লীগ। তারা বলছে, এটি একটি ঢালাও অভিযোগ।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যে সংঘর্ষের ঘটনা দেখা গেছে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী এবং দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে।

সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, এর পেছনে রয়েছে বিএনপির ষড়যন্ত্র।

“আওয়ামীলীগের মত একটি বৃহৎ সংগঠনে যেখানে একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছে নির্বাচন করার সেখানে যারা না পেয়ে হতাশ হয়েছে তাদেরকে বিএনপি ইন্ধন দিয়ে মাঠে নামিয়ে বিএনপি সহিংসতা সৃষ্টি করছে” বলেন মি. হানিফ।

তবে মি. হানিফের এ বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি অভিযোগ হিসেবে বর্ণনা করছে বিএনপি।

দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলছেন, তাদের নেতা-কর্মীরা যেখানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সেখানে এধরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

“বিশেষ করে যারা সরকারী দল থেকে নমিনেশন পেয়েছেন তারা ধরে নিচ্ছেন যে তারা জিতবেন অর্থাৎ সরকার তাদের জিতিয়ে দেবে, সেক্ষেত্রে তারা যখন তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেখছেন তারা সেটা সহ্য করতে পারছেন না”। বলেন মি. রিজভী।

নির্বাচনে এই সহিংসতার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিএনপি। তবে এসব অভিযোগ নাকচ করছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ বলছেন, স্থানীয় পর্যায়ে প্রার্থীদের সহিংসতার দায় নির্বাচন কমিশন নেবে না। তিনি বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক থাকা স্বত্ত্বেও বিচ্ছিন্নভাবে এসব সহিংসতা হচ্ছে।

“মারামারি করছে স্থানীয় পর্যায়ে, নির্বাচন কমিশন কিভাবে এর দায় নেবে? যারা মারামারি করছে এই দায় তাদেরই”। বলেন মি. শাহনেওয়াজ।

ব্যাপক সহিংসতার কথা স্বীকার করলেও হতাহতের সংখ্যা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। মি. শাহনেওয়াজ বলছেন, গণমাধ্যম থেকে তারা যে সংখ্যা পেয়েছেন তাতে হতাহত শতাধিক নয়, বরং বেশ খানিকটা কম হবে। -বিবিসি বাংলা



মন্তব্য চালু নেই